বিশেষ প্রতিনিধি
কিছু প্রিয়জনের স্মৃতি ভোলা যায় না। রক্ত সম্পর্কের আত্নীয় না হয়েও যারা আত্নার আত্নীয়, কতইনা আপনজন। হযরত মাওলানা আব্দুল কাদির ছাহেব (র.) বুরাইয়া হুজুর আমাদের তেমনি এক আত্নীয় ছিলেন।
বুরাইয়া হুজুরের সাথে আমাদের স্মৃতি অনেকটা মাহে রামাদান কেন্দ্রিক। রামাদান আসলে আমরা হুজুরের জন্য অপেক্ষা করতাম। তিনি না পৌছা পর্যন্ত মনে হতো কি যেন অপূর্ণতা রয়ে গেছে। ফুলতলী এসে চিরচনা সেই দরাজ হাসি ছড়িয়ে বলতেন আলহামদুলিল্লাহ, আমি চলে এসেছি।
দারুল কিরাতের খিদমাতে জড়িত থাকার সুবাদে দীর্ঘদিন হুজুরকে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তিনি ছিলেন একজন আবিদ, কোরআনে পাকের আশিক, সদাহাস্যোজ্বল, আল্লাহর ওলী। হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সাথে তাঁর আন্তরিকতা কল্পনাকেও হার মানাত। দারুল কিরাতের কোন বিষয়ে বিশৃঙ্খলা/অনিয়ম দেখে ছাহেব কিবলাহ রাগান্বিত হলে বাবা-চাচারা তখন সামনে যেতেন না। বুরাইয়ার হুজুর বাচ্চাদের মতো ছাহেবের সামনে হাজির হয়ে সব দায়ই মাথা পেতে নিতেন। ইন্তেকালের পর যখনই ছাহেব কিবলাহ সম্পর্কে কোন আলোচনা হতো অঝোর ধারায় তাঁকে কাদতে দেখেছি।তিনি ছিলেন হযরত ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর সুযোগ্য খলিফা। কথায় আছে মানুষ যখন কাউকে ভালোবাসে তার সবকিছুই তার ভালো লাগে। ছাহেবজাদাগন বা এ বাড়ির কোন আত্নীয়-স্বজন এমনকি ছাহেব বাড়ির কাজের মানুষের সাথে হুজুরের অকৃত্রিম ও অমায়িক ব্যবহারে ছাহেব কিবলাহর প্রতি তাঁর মুহাব্বাতের প্রমাণ পাওয়া যেত।
আমাদের ওয়ালিদ মুহতারাম (মাইজম ছাহেব) কোন এক রামাদানে হুজুরকে উনার সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে জানালেন তাঁর কোন সন্তান নেই। তৎক্ষনাৎ হুজুরকে নিয়ে ছাহেব কিবলাহ (র.) এর কাছে গেলে তিনি দোয়া করলেন। আলহামদুলিল্লাহ, পরবর্তীতে আল্লাহ পাক তাঁকে দীর্ঘ ২১ বৎসর পর সন্তান দান করেন।
তিনি সুদীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ফুলতলীতে দারুল কিরাত প্রধান কেন্দ্রে নি:স্বার্থভাবে খিদমাত আনজাম দিয়েছেন। দারুল কিরাতের খিদমাতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। বিশেষত: খাবার বিতরণের সময় হুজুরই শৃঙ্খলা রক্ষায় নেতৃত্ব দিতেন । চরম বৃষ্টির দিনে সেহরির সময়ে মাথায় করে বয়ে এনে ছাত্রদের খাবার বিতরণ করতেন। বাল্যকালে আমরা দেখেছি হুজুর ফুলতলীতে মসজিদের কাছের বাংলাঘরে থাকতেন। তখনকার সময়ে ভারতের মাওলানা মুবাশ্বির আহমদ ছাহেবও হুজুরের সাথে থাকতে
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: নুরুল হক, শহিদ মিয়া