সোমবার, ০৫ জুন ২০২৩, ১২:১৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
হাফিজ মাওলানা আহমদ শফী সিলেটের বিভাগীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচিতজামালগঞ্জে- ভূমি বিরোধে নিহত ১ , গ্রেফতার – ৪সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে ভূমি দখল ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়েছে।নাসিরনগর থানা পুলিশ একযোগে অভিযান চালিয়ে ৩৮৬ টি অবৈধ অস্র উদ্ধারসুনামগঞ্জ জেলায় নবনিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাকির হোসাইন যোগদানশাল্লার হবিবপুর গ্রামে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যুজামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের বার্ষিক উন্মুক্ত বাজেট সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে কালচারাল ফোরাম’র এক দশক পূর্তি উদযাপিতজামালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তিতে আলোচনা সভানাসিরনগরে নিবন্ধিত কৃষক থেকে ধান সংগ্রহের উদ্বোধন

প্রদীপ্ত মনীষাঃ মাওলানা আব্দুল কাদির ঘোড়াডুম্বুরী (রহ.) -মুহাম্মদ নুর হোসেন

হাওড় বার্তা ডেস্কঃ
  • আপডেট শনিবার, ১ মে, ২০২১
  • ৪৯০ বার পড়া হয়েছে

 

প্রদীপ্ত মনীষাঃ মাওলানা আব্দুল কাদির ঘোড়াডুম্বুরী রহ.মুহাম্মদ নুর হোসেন

লাগাতার ৪৬ বছর রামাদ্বান মাসব্যাপী পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের খিদমাত। ৪০ বছরেরও অধিক সময় দ্বীনি দরসে জড়িত রেখেছিলেন নিজেকে। হাদীসের খিদমাত করেছেন বিস্তৃত এই সময়টা জুড়ে। ৬৫/৭০ বছরের এক জিন্দেগীতে এরচেয়ে বেশি আর কি কিছু করা যেতো? অথবা এতটুকু যা করেছেন তাই কি এ সংক্ষিপ্ত জীবনে অনেক বেশিই নয়?

সত্য বলতে উপরের কথাগুলো জানার খাতিরে প্রশ্ন করা নয়; জানানোর খাতিরে তুলে ধরা। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রহ. এর মুরিদান-মুহিব্বীন মাত্রই এই মানুষটাকে জানেন ‘বুরাইয়ার হুজুর’ হিসেবে। আর পশ্চিম সিলেটে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ‘ঘোড়াডুম্বুরী হুজুর’ নামে। পিতা মাতার দেয়া আব্দুল কাদির। পিতা-মাতা যেই আশা-বিশ্বাস থেকে এই নাম রেখেছিলেন তা যেনো জীবনের সফর শেষে শতভাগ সফলই করেছেন। সংক্ষিপ্ত এক জীবনে সর্বমহলে যে সম্মানের আসন গড়ে গেছেন, যে কৃতিত্ব রেখে গেছেন তা কয়েক শতাব্দী তাকে জিইয়ে রাখবে মানব মনে।

১৯৭৪ সালে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রহ. এর কাছ থেকে ইলমে কিরাত শুদ্ধ পঠনের সর্বোচ্চ সনদ গ্রহন করেন। এরপর লেগে যান মুর্শিদ আজ্ঞা পালনে ইলমে ক্বিরাতের খিদমাতে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ সুদীর্ঘ ১০ বছর কাটিয়েছেন দারুল হাদীস বুরাইয়ায় ইলমে ক্বিরাতের খিদমাতে। পরের বছর গণিপুর সেন্টারে। এরপরেই ডাক আসে প্রিয় মুর্শিদ সান্নিধ্যে ইলমে ক্বিরাতের খিদমাতে। পরম চাওয়া এবার সত্য হয়ে ধরা দিলো। ছোটে গেলেন মুর্শিদ ক্বিবলার খিদমাতে। মুর্শিদ কিবলার তত্ত্বাবধানে শুরু হলো কুরআনের খিদমাত। সুদীর্ঘ ৩৩ বছর (মরণের আগ পর্যন্ত) কেটেছে সেখানেই। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের প্রতি তাঁর কেমন টান তার প্রমাণ মিলে বয়স ও রোগের কারণে ন্যুব্জ হয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে যখন স্বাভাবিক চলাফেরাও তাঁর কাছে ছিল কষ্টকর, ঠিক সে সময়টাও রামাদ্বান মাসে রোজা রেখে ছোটে যেতেন প্রাণাধিক প্রিয় মুর্শিদ বাড়িতে। মুরুব্বীর বলয়ে নয়; নিজকে একজন সাধারণ ক্বারী ছাহেবের ন্যায় সঁপে দিতেন ইলমে ক্বিরাতের খিদমাতে। হ্যাঁ! তাঁর সহকর্মীরাও কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁকে যথেষ্ট সম্মানের চোখে দেখতেন। ফুলতলী ছাহেব বাড়িতে রামাদ্বান মাসে বদর দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতির আসনে প্রায়ই তাঁকে দেখতাম। আল্লামা ছাহেব কিবলাহ রহ. এর পরিবার-পরিজন ও তাঁর সহকর্মীদের ভাষ্যমতেও জানা যায় নির্দিষ্ট রুটিন পরবর্তী অধিকাংশ সময় তাঁকে দেখা যেতো পবিত্র কুরআন শরীফ হাতে। এ থেকে অনুমেয় ইলমে ক্বিরাতের বিরামহীন খিদমাতের পাশাপাশি কয়েক খতম কুরআন শরীফ পড়া শেষ করতেন তিনি। স্বয়ং ছাহেব কিবলাহ রহ. এর আওলাদগণের কাছ থেকেই পাই তিনি ছিলেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রহ. এর খুব কাছের মানুষ। খুব স্নেহের একজন।

১৯৭৫ সনে মাদরাসা শিক্ষায় কামিল সমাপ্ত করেন তিনি। সেই থেকে অবসর আগ পর্যন্ত ছিলেন একাধারে ইলমে হাদীসের খিদমাতে। দারুল হাদীস বুরাইয়ার আনাচে-কানাচে তার বিচরণ চিহ্ন এখনো জ্বাজ্জল্যমান। অবসরে আগে শেষ কয় বছর দেখেছি অসুস্থ শরীর নিয়েও দু’তলা/তিনতলা পায়ে হেঁটে গিয়ে ক্লাস করাতেন অবলীলায়।
শেষ কয়টি বছর বিরামহীন খানকা পরিচালনা করেছেন। যে বয়সে নির্দ্বিধায় বিছানায় শরীর পেতে বিশ্রামের কথা সেই সময়ে সপ্তাহ দু’বার ভাটির অঞ্চলের ভঙ্গুর পথ পদতলে মাড়িয়েছেন উম্মাহকে তাযকিয়ার দরস দানে।

যে অঞ্চল থেকে তিনি উঠে এসেছেন, সম্পৃক্ত হয়েছেন মাসলাকে ফুলতলীর সাথে, সেই অঞ্চল ছিল এই পথের এই মতের অনুর্বর ভুমি। তবুও তিনি পেরেছেন। তিনি হক্বের পথ-মত আঁকড়ে ধরেছেন। পেয়েছেন জামানার মুজাদ্দিদ, আয়নায়ে জামালে আহমদী, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ওলীর সোহবত।

এক কর্মময় জীবন ছিল তাঁর। কোনো বিশ্রাম নেই। নেই পরিশ্রমের কোনো ছাপ। শুধুই ছুটে চলা। দ্বীনের পথে চলা। দ্বীনের খিদমাত সবার আগে। উম্মাহর খিদমাত করতে পারাই যেনো অন্তরের তৃপ্তি।
এমন জীবনের কোনো ক্ষয় নেই। কোনো ভয়ও নেই। ইহ-পরকাল আল্লাহর জিম্মায়। রবের সাথে এ এক ৭০গুণ মুনাফার ব্যবসা। এ ব্যবসায় লস নেই। লাভের পরিমাণ অপরিসীম। এ জীবন আকাশে সমাদর লোভী। দুনিয়া সে তো তুচ্ছ মরিচিকা জ্ঞানে পেরিয়ে যাওয়া। আখিরাতের শষ্যক্ষেত্র, যত পারো খেটে যাও। খেটে গেছেন। রবের দয়া যেনো তাঁর কপালে সৌভাগ্যের তিলক আঁকে। আমীন।

সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ পেতে ক্লিক করুন।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নিবন্ধনকৃত পত্রিকা © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281