দক্ষিণ সুনামগঞ্জ বিশেষ প্রতিনিধি
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ডুংরিয়া গ্রামের দুই মেধাবী মুহিত ও নাইমুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে পুরো গ্রামে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। কারণ ডুংরিয়া গ্রামের ইতিহাসে দুজনেই প্রথম যে একসাথে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন।
মেধাবী নাইমুর, ডুংরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে জিপিএ-৫ সহ এসএসসি পাশ করেন, পরে তিনি সিলেট ব্লু বার্ড হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে জিপিএ-৫ সহ এইচএসসি পাশ করেন। নাইমুর ডুংরিয়া (ঘরোয়া) গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী আমিনুর রহমানের ছেলে তার মায়ের নাম ইয়াসমিন বেগম। নাইমুর ভবিষ্যতে একজন ভাল ডাক্তার হয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করতে চান। নাইমুর বক্তব্যে জানা যায় যে
গোধূলি লগ্নে আকাশের দিকে নিস্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকা এক তরুণ, আমি নাঈমুর রহমান। আমার জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামে। ছোট বেলা থেকে আমার একা একা থাকতে ভাল লাগে। তাই সময় অপচয় করার চিরায়ত যে কারণ গুলো আছে তা আমার মধ্যে প্রায় নেই বললেই চলে।আমার বন্ধুর সংখ্যার চেয়ে আমার ডান হাতের আঙুলের সংখ্যাই বেশি। আমি সামাজের নিয়মকানুন থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা একটা প্রাণী। আমার মানুষের চেহারা ও নাম এ দুটি প্রায়ই মনে থাকে না তাই এই কারণে অনেকে কষ্ট ও পেয়েছে আবার অনেকে রাগও করেছে। তবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে আমি স্বাচ্ছন্ধবোধ করি।হ্যাঁ তবে ছোট বেলা থেকে আমার পড়াশোনা করতে ভালো লাগে। অজানাকে জানার আমার এক প্রবল আগ্রহ রয়েছে। আমি সর্বদাই জানার জন্য পড়াশোনা করে থাকি। পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করা আমার কখনোই ফোকাসে থাকে না। তাই আমার ফলাফল সর্বদাই better, best নয়।আমার গ্রামের মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া প্রথম ছাত্রের মধ্যে আমিও একজন। এটা আমার জন্যে খুবই ভালো অনুভূতি। আমার ফলাফলের জন্য আমার আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা কখনও কল্পনা করিনি।আমার এই সাফল্যের পেছনে যদি কারো সবচেয়ে বেশি অবদান থাকে তবে তা আমার পরিবার। আমার পরিবার বরাবরই আমার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছে।কয়েকদিন আগে আমার পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের সাথে সাক্ষাৎ হয়। আমার ফলাফলে উনি যে এত খুশি হবেন তা আমি কখনো ভাবিনি। তবে বলা হয় রত্নের কদর জোহরি করে থাকে।আমি উনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। উনার অবদানে আমার বাড়ির এত পাশে একটা মেডিকেল কলেজ হয়েছে। তাছাড়া এই মেডিকেল কলেজ না হলে হয়তো আমি কোথাও সুযোগই পেতাম না। তাই আমি উনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। আমি আমার এই সাফল্য অর্পন করছি আমার পরিবার, আমার শিক্ষক আমার মেন্টর নাসিম ভাই ও আমার বন্ধুদের। তবে আমার কাছে এটা সাফল্য মনে হয় না এটা ত দীর্ঘ যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। আমাকে সবার মুচকি হাসিতে রাখবেন।
অপরদিকে মুহিত সিলেট সরকারী মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাস করেছেন। এবারের মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় মেধাবী মুহিত বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস (১ম বর্ষে) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তিনি ডুংরিয়া গ্রামের দক্ষিণ কান্দা নিবাসী ছমছু মিয়ার ছেলে।
এদিকে তাদের সাফল্যে আনন্দে ভাসছে পুরো ডুংরিয়া গ্রামবাসী। এছাড়া অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: নুরুল হক, শহিদ মিয়া