আনোয়ার (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সবুজ আর হলুদের মিতালীতে সেজেছে গ্রামের সরিষা ক্ষেতগুলো। যেখানে রয়েছে দৃষ্টিজুড়ে হলুদের অপার সৌন্দর্যের সমারোহ। এইসব সরিষা ক্ষেতের ওপর ভেসে থাকা কুয়াশা সকালবেলার প্রকৃতিকে মনোমুগ্ধকর করে তোলে। প্রাকৃতিক এ সৌন্দর্য অবলোকনে ভারাক্রান্ত মনটিও যেন আনন্দে ভরে উঠবে। হিমেল বাতাস সরিষা ক্ষেত ছুঁয়ে মন মাতানো গন্ধ পৌঁছে দিচ্ছে লোকালয়ে। সেই গন্ধ যেমন সবাইকে আকৃষ্ট করছে, তেমনই বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। এ সরিষা ক্ষেতকে নানা প্রজাতির মাছি-মৌমাছি ও প্রজাপতির আনাগোনার শ্রেষ্ঠ স্থানও বললে চলে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সরিষার আবাদে সাফল্য এসেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার ৪ ইউনিয়নে চরাঞ্চলের অনাবাদি ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় সরিষা বিক্রি করে ভালো লাভ হবে বলে কৃষকদের আশা। কৃষি কর্মকর্তাদের মতে, চাষে খরচ কম আর লাভ বেশি বলে সব অনাবাদি জমিতে সরিষা উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাইলধর, রায়পুর, বরুমচড়া, বাখাইন, চাতরী ও পরেকোড়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে কয়েক হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যায়। এসব অনাবাদি জমিতে আবাদ সৃষ্টি করতে গত বছর কৃষকদের মাধ্যমে ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ শুরু করে কৃষি অফিস। এতে সাফল্য আসায় চলতি মৌসুমে তা ১০ হেক্টর বেড়ে ৭০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। আনোয়ারায় বিনা-৪,৯ ও বারি-১৪, ১৭ জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৭-৮ মণ সরিষা পাওয়া যায়, আর প্রতি কেজি সরিষার মূল্য ৬০-৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। পাশাপাশি সরিষা ক্ষেত থেকে মধু পাওয়ার জন্য মৌ-বাক্সও স্থাপন করার চিন্তা করছে কৃষি অফিস।
কেঁয়াগড় গ্রামের কৃষক সমীর দত্ত (৫৬) বলেন, ৩০ শতক জমিতে এবার বিনা-৯ জাতের সরিষার চাষ করেছি। খরচ হয়েছে মাত্র চার হাজার ৬শ’ টাকা। ক্ষেতের সরিষা বিক্রি করে লাভের আশা করছি। পাশাপাশি ক্ষেত থেকে মধু আহরণের জন্য আগামী বছর থেকে মৌ-বাক্সও বসাব।
আনোয়ার কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ছরোয়ার আলম বলেন, আনোয়ারায় গত বছর ৬০ হেক্টর অনাবাদি জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সরিষার চাষ শুরু করে সাফল্য পাওয়া চলতি বছর তা বেড়েছে। এবারও আবাদে সাফল্য আসায় কৃষকরা সরিষার আবাদ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আশা করছি। তা ছাড়া সরিষা জমিতে মাড়াই করলে জমির উর্বরতা বাড়ে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।