গ্রামে সাধারণত দেখা যায় পুরুষেরা কৃষিকাজ,ব্যবসা বানিজ্য সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। আর নারীরা অনেকেই গৃহিণী। কিন্তু এ গ্রামে প্রায় প্রত্যেক ঘরেই নারী-পুরুষ দুজনকেই ঘরের কাজ এবং বাহিরের কাজ করতে দেখা যায় সমানভাবে। এই গ্রামে রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,তিনটি মসজিদ ও একটি ঈদ গাহের মাঠ।
এবার বলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা।
আমাদের গ্রামটি ছবির মতাে অপূর্ব সুন্দরে ভরপুর। আম-জাম,কাঁঠাল-লিচু, নারিকেল-সুপারি, শিমুল-পলাশ,তাল- বেল,আর নানা রকমের গাছপালায় সু-স্বজ্জিত আমাদের এই গ্রাম। ঝােপঝাড় লতা-পাতার নিবিড় ঘনিষ্ঠতা সবার মন কেড়ে নেয় গ্রামটি। পাক-পাখলির কলকূজনে সব সময়ই মুখর থাকে গ্রামটির নাম।
দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ,ধান-গম,পাট,আর বেগুন,শিম,লাউ সহ নানা রকমের শস্য ফলিয়ে থাকেন গ্রামের কৃষকরা।নিঝুম দুপুরে বটের ছায়ায় রাখালের বাঁশি উদাস করে মন প্রাণ।দিঘী-ডােবা,বিল-ঝিল- কী এক অপূর্ব সৌন্দর্যের সঞ্চয়।
যে কারণে মানিকপুর বিখ্যাত।
বৃটিশ আমলে জমিদার গৌরিপুরের জমিদার নায়েব হরিপদ রায় চৌধূরী ও শান্তিপদ রায় চৌধূরী’র কাচারি বাড়ি ছিল ছাতকের মানিকপুরে। সবুজে ঘেরা বনের লতা-পাতায় বেষ্টিত মানিকপুর গ্রামের তখনকার নাম ছিল বনগাঁও।সে সময় জমিদারা শখের বশে কয়েকটি লিচুর চারা গাছ নিজ হাতে রোপন করেছিলেন কাচারি বাড়িতে।
কালের প্রবাহে বনগাঁও হয়ে যায় মানিকপুর। এর পর থেকে লিচু গাছ ক্রমে ক্রমে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে মানিকপুর সহ ছাতক উপজেলার গোদাবাড়ী, রাজার গাঁও,কচুদাইড়,চাঁনপুর, রংপুর সহ বিভিন্ন গ্রামে।মানিকপুর গ্রামে এখন এমন কোনো বাড়ি নেই যাদের উঠুনে বা বাড়ির আশেপাশে লিচুর গাছ নেই। তাছাড়া আবার চোখে পরার মতো আছে অনেক গুলো লিচুর বাগান।
মধুর মাস জৈষ্ঠ্য আসলে দেখা যায় আল্লাহর অশেষ নিয়ামতে ভরপুর গাছে গাছে লিচুর ছড়াছড়ি।লিচুর মৌসুমে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসেন পর্যটকরা, এক বাগান থেকে অন্য বাগানে আনন্দে আনন্দে ঘুরে বেড়ান সবাই, রীতিমতো পর্যটন স্পষ্ট হয়ে উঠে এই গ্রামটি। এখন সবার মুখে মুখে লিচুর গ্রাম মানিকপুর নামেই খ্যাত।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: পাঠকের সুবিধার্থে গ্রামের অবস্থান তুলে ধরা হলো- গ্রামের নাম মানিকপুর। এটি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার অন্তর্গত। ছাতক থেকে সড়ক পথে খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন লিচুর গ্রাম মানিকপুর।
গ্রাম: মানিকপুর, ছাতক, সুনামগঞ্জ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।