নিজস্ব প্রতিবেদক
মায়ানমার থেকে আসা পুরাতন রোহিঙ্গা আনছার
কাপড় ব্যবসার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা ও মানবপাচার এবং নিত্য নতুন অপকর্ম।
অল্প কয়েক বছরের মধ্যে বনে গেছে কোটিপতি। শুধু তাইনয় এই কালো টাকায় করেছে এনআইডি ও পাসপোর্ট। এই রোহিঙ্গা আনছার বিভিন্ন পেশায় কাজ করে বলে এলাকাবাসী জানান, আনছার উল্লাহ মাঝে মাঝে মাস্টার,আবার মাঝে মাঝে অপহরণ চক্রের সদস্য, আবার মাঝে মাঝে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি পেশায় লিপ্ত হয়।
প্রথমে কোন মতে বসাবাস তার পরের টার্গেট ছিল স্থানীয়দের ম্যানেজ করে ভোটার আইডি কার্ড করা যেন নিত্যদিনের এক পেশা। টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বাংলাদেশী এনআইডি এবং পাসপোর্ট করে এখন রোহিঙ্গা আনছার রাতারাতি হয়ে গেছে কোটিপতি।
এছাড়া রোহিঙ্গা আনছার নিজেও বাংলাদেশী ভোটার হয়ে নিজেকে স্থানীয় বলে দাবি করেন। যার ফলে বিরাট বাড়ি করে ক্যাম্পের বাইরের এলাকায় বসবাস করতেছে। এছাড়া ইয়াবা কারবারীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার ব্যাপারে বেশ অভিযোগ উঠেছে। যা রোহিঙ্গা আনছার এখন ইয়াবার গডফাদার নামেও পরিচিত।
আনছার উল্লাহর যে অপকর্মের সাথে লিপ্ত আছে তার মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি এক প্রবাসীকে হত্যা করা হয়। সেই মামলায় আনছার উল্লাহকে বাংলাদেশে প্রধান আসামি করা হয়। মালয়েশিয়ায় আসছার উল্লাহর ভাই বাংলাদেশী প্রবাসী কে হত্যা করেন। এ হত্যায় যে টাকা আদান-প্রদান করা হয়েছে সব আনছার উল্লাহর একাউন্টে লেনদেন করা হয়। সে সূত্রপাতে আনছার উরল্লাহ কে এই হত্যা মামলায় র্যাব আটক করেন।তাকে জেলে প্রেরণ করা হয়।সেই দীর্ঘ দেড় বছর জেল কেটেছিলেন।এরপরে নয়াপাড়া রেজিস্ট্রাট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জুবায়ের মারাল মামলায় তাকে আসামি করা হয়।এই মামলায় এখনো পলাতক রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন অপহরণের সাথে সম্পৃক্ত আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যে, ক্রিমিনাল লিস্ট করা হয় এ লিস্টে রোহিঙ্গা আনসার ৬ নাম্বারে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা।
আনছার উল্লাহ ক্যাম্পে কয়েকটি অপহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত আছে বলে জানা যায়, ক্যাম্পের ভেতর যে পুতিয়া গ্রুপ এক নামে পরিচিত এই গ্রুপের সাথে আনছার উল্লাহর সম্পৃক্ত রয়েছে। এরপরে জকিরের ভাই দিল মোহাম্মদ বাহিনীর সদস্যের সাথে তার সম্পৃক্ত রয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পের ভেতরে দিনের পর দিন যে, অপকর্ম করে যাচ্ছে রকী বাহিনী যার নাম শুনলে মানুষ ভয়ে ক্যাম্পের ভেতর চলাফেরা করতে চাইনা এই গ্রুপের সাথে রোহিঙ্গা আনসার সাথে সংশ্লিষ্ট আছে বলে জানা যায়।
অভিযোগে জানা যায়,টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌচনী এলাকার নয়াপাড়া রেজিসট্রাট ক্যাম্পের পি- ব্লকের লালু মাঝির ছেলে আনছার উল্লাহ। যে কিনা ইয়াবার স্বর্গে যেন বসবাস করতেছে। ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে নিজেকে তৈরী করেছে একজন কোটিপতির তালিকায়। সমাজের চোখে আড়াল করে ভালো মানুষ সেজে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন।
সম্প্রতি আনছার মাসের পর মাস বিদেশ যাতায়াতের খবরও বেশ রটেছে এলাকায়। যার কালো টাকার জাদুতে অতিষ্ঠ পুরো এলাকাবাসী।
কিছুদিন আগে রোহিঙ্গাদের সনদ এবং পাসপোর্ট করে দেওয়া কাজে সহায়তা করার দায়ে ৩ কাউন্সিলর ও পৌরসভার এক কর্মচারী আটক হওয়ার ফলে বেরিয়ে আসছে চমকপ্রদ তথ্য স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে মতে বিপুল টাকা এবং বাড়তি সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বে সমস্ত সুযোগ করে দিয়েছে জনপ্রতিনিধি সহ একটি সিন্ডিকেট। তাই পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড এবং পুরো জেলায় রোহিঙ্গা সনাক্তকরণ একটি জরিপ চালু করার আহবান জানান সচেতন মহল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে টেকনাফ মৌচনী ক্যাম্পে পি ব্লক আনছার একজন রোহিঙ্গা। তারা প্রায় অনেক বছর আগে বার্মা থেকে বাংলাদেশে এসেছে তবে বর্তমানে তাদের পরিবারে সবাই আইডি কার্ডধারী অনেকে পাসপোর্টধারী। বর্তমানে আনছারের ক্যাম্পে একটি কাপড়ের বড় দোকান রয়েছে। যার ব্যবসার আড়ালে রয়েছে ইয়াবা ব্যবসার রাজ্য।
বর্তমানে মায়ামনার থেকে আসার তাদের পুরাতন আত্বীয় স্বজন প্রায় সময় তাদের বাড়িতে আসে বলে জানান কয়েক জন রোহিঙ্গা। এছাড়া তার আত্মীয় অনেকে বর্তমানে বাংলাদেশী পরিচয় দিয়ে এনজিওতে চাকরী করে।
এদিকে গত ২৮ মার্চ রোহিঙ্গা ভোটার এবং পাসপোর্ট করার কাজে সহায়তা করার দায়ে কক্সবাজার পৌরসভার বর্তমান ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান,সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম এবং জাবেদ মোঃ কায়সার নোবেলকে আটক করে দূর্নীতি দমন কমিশন একই সাথে পৌরসভার অফিস সহকারী দিদারুল ইসলামকেও আটক করে দুদক। একই দিন এই ঘটনায় আটক ৩ কাউন্সিলার ছাড়াও বর্তমান কাউন্সিলার আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকি জামশেদ,নাছিমা আক্তার বকুল,সাবেক কাউন্সিলার হুমায়রা আক্তার,বর্তমান কাউন্সিলার ছালাউদ্দিন সেতু সহ ৫ পুলিশ এক আইনজীবি,দুই ইউপি চেয়ারম্যান.দুই ইউপি সচিব সহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ ব্যপারে দূর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম অঞ্চল-২ এর উপ পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন,দীর্ঘ তদন্ত শেষে দুদক প্রমান পেয়েছে।
জনপ্রতিনিধি,পুলিশ সহ একটি সিন্ডিকেট রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সনদ দিয়ে পাসপোর্ট পেতে সহায়তা করেছে এতে দেশের স্বার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়েছে। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আরো তদন্ত পূর্বক আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ব্যাপারে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে রোহিঙ্গা আনছার এর কাছ থেকে জানতে চাইলে সে সাংবাদিকদের বলেন যে আমার নামে যে জুবায়ের হত্যা মামলায় রয়েছে সেটি মিটমাট করে ফেলছি।
এর পরে মালেশিয়া বাংলাদোশী প্রবাসী হত্যা মামলাকে সেই লিপ্ত নয় বলে দাবি করেন। পরে রাগান্বিত কন্ঠে বলে আমার ব্যাপারে অভিযোগ গুলো সত্য হলে সেটা প্রমাণ করবে প্রশাসন এবং সেটা প্রশাসন দেখবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।