শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নাসিরনগরে যুবদলের ইফতার ও দোয়া মাহফিলছাতকে কিশোরী ধর্ষণের চেষ্টা : বখাটে যুবক আটক অভিযুক্তের বাড়ি-ঘর ভাংচুরপ্রবাসী ফুটবলারদের আগমন, বিরোধীতায় সাবেক তারকা ফুটবলাররাশুধু নেইমার নয়,  বাদ পড়েছেন এদারসন ও দানিলো।ছাতকে শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টায় আসামি গ্রেপ্তার ব্রাজিলের স্কোয়াড থেকে বাদ পরেছেন নেইমার জুনিয়রতরুণ সংঘ গোবিন্দনগরের উদ্যোগে ৫ম বার্ষিক ইফতার মাহফিলবাংলাদেশের কে বর্তমান সুপার স্টার সাকিব নাকি হামজা রিফাত মাসুদের স্ট্যাটাসশান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটি পূর্ণগঠন এমসি কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির ইফতার মাহফিল ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত 

কুষ্টিয়ার গোল্ড ব্যবসায়ী ভয়ঙ্কর প্রতারক শিক্ষক মহাদেব পালের সন্ধান লাভ-হাওড় বার্তা

কে এম রেজা
  • সংবাদ প্রকাশ বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১
  • ৯০৮ বার পড়া হয়েছে

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।

কুষ্টিয়ার গোল্ড ব্যবসায়ী ও ভয়ঙ্কর প্রতারক শিক্ষক মহাদেব পালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর বালিয়াপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের স্কুল শাখার ব্যবসায় শিক্ষা শাখার একজন শিক্ষক। উক্ত প্রতিষ্ঠানে ২০১২ সালে যোগদান করার পর থেকেই শিক্ষকতার অন্তরালে গোল্ড ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত এলাকায় তাকে গোল্ড মাফিয়া মহাদেব নামে সকলেই চেনে। তার বাড়ি কুষ্টিয়া ইবি থানার ধলনগর গ্রামে।
কুষ্টিয়ার একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে শিক্ষকতা পেশার অন্তরালে দীর্ঘদিন ধরে মহাদেব পাল সোনা পাচারের কাজে লিপ্ত থেকে উপার্জন করেছিল প্রচুর পরিমাণ অর্থ। গত চার-পাঁচ বছর আগে গোল্ডের বেশ কয়েকটি চালান ধরা পড়লেও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। গোল্ডের চালান ধরা পড়ার কারণে হঠাৎ করেই তার বিপুল পরিমাণ অর্থের ঘাটতি দেখা দেয়।
অর্থ ঘাটতি পূরণের জন্য তিনি বেছে নেন নতুন কৌশল। একের পর এক তার নিজ গ্রাম ধলনগরের আপন চাচি শাশুড়ির মেয়ের চাকরি দেয়ার নাম করে ভিটে মাটি বিক্রি করে অর্থ বাগিয়ে নেয়, সেই সাথে কেড়ে নেয় ১০ ভরি স্বর্ণের গহনা। এদিকে বালিয়াপাড়া গ্রামের রিপন, সৈন্য, সাব্বাস, নিজাম মন্ডল, মজিবর সহ প্রায় ২০/২৫ জন ব্যক্তির সন্তানদের চাকরি দেয়ার নাম করে চেক দিয়ে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পোড়াদহের বিমলের কাছ থেকে চেক দিয়ে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। চুয়াডাঙ্গা এলাকার আলিম লস্করের কাছ থেকে ১লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় চেক দিয়ে। রাজবাড়ী এলাকার এক ব্যক্তি ইতিমধ্যে পাওনা টাকার জন্য চেকের বিপরীতে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, উক্ত মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে মহামান্য আদালত।
কুষ্টিয়া শহরের এক মুদি দোকানদার লুৎফরের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা, মঙ্গলবাড়িয়া এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিন্দু ধর্মীয় গরীব নিরীহ ব্যক্তির নিকট থেকে এক লক্ষ টাকা, কুষ্টিয়া শহরের নাম প্রকাশে আর একজন ব্যক্তির নিকট থেকে ৫ লক্ষ টাকা সহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে চেক দিয়ে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
এমনকি কুষ্টিয়া পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চাকরি দেওয়ার প্রাক্কালে তিনি ধরা খেলে অবশেষে হাতে-পায়ে ধরে সেযাত্রাও তিনি রক্ষা পায়। কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের ছাত্র ভর্তির জন্য এনএস রোডের এক অভিভাবকের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। বালিয়াপাড়া স্কুলে বিএসসি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এক ক্যান্ডিডেটের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল ৮ লক্ষ টাকা পরবর্তীতে উক্ত টাকা ফেরত দেয়া লেগেছে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।
করোনাকালীন সময়ে স্কুলে চাওয়ার কারণে বর্তমানে তিনি এখন পলাতক রয়েছে, তবে পাওনাদাররা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন যে, তিনি কুষ্টিয়া শহরের বজলার মোড় থেকে নিশান মোড়ের মধ্যবর্তী একটি বাসায় ভাড়া রয়েছেন। প্রতিদিন তিনি কাক ডাকা ভোরে বাসা থেকে বেরিয়ে যান এবং রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢোকেন বলে জানিয়েছেন তারা। তবে তিনি পাওনাদারদের উৎপাতে প্রতি দুই মাস পর-পর বাসা পরিবর্তন করেন।
তারা আরো বলেন, আমরা টাকা চাইতে গেলে মহাদেব পাল আমাদেরকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে, এছাড়াও তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম ভাঙিয়েও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন প্রতিনিয়ত।
ইতিপূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুটপাট ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল, পরবর্তীতে নেতাদের হাতে পায়ে ধরে আবার চাকুরী ফিরে পায়।
২০১৫ সালে পোড়াদহের বিমলের লোকজন মাইক্রো নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছিল তাকে তুলে নিয়ে যেতে, অর্থ আদায়ের জন্য। ওই সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাকে রক্ষা করেছিল। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেয়েদের সঙ্গে ছিল তার অবাধ মেলামেশা এমনকি বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চেয়েছিল। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা তাকে থমকে দেয়, বন্ধ হয়ে যায় তার বিবাহ।
অন্যদিকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষকের মুখ থেকে জানা গেছে, সে একজন ভয়ঙ্কর প্রতারক ও গোল্ড পাচারকারী। তার নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। আমরা তার সঙ্গে কোন কথাও বলি না যোগাযোগ করার চেষ্টাও করিনা তবে বিভিন্ন পাওনাদাররা প্রতিদিনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার খোঁজে আসতে দেখি।

তার বিষয়ে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক’র এর সাথে তার বিষয়ে সার্বিক কথা হলে তিনি বলেন, আমরা মহাদেব পালকে নিয়ে বিপদের মধ্যে আছি দীর্ঘ দশটি বছর ধরে। অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে তিনি নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছেন। ইতিমধ্যে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। অন্যদিকে পাওনাদারেরা টাকার জন্য হরহামেশা প্রতিষ্ঠানে আসছে। এছাড়াও তার চাচি শাশুড়ি একদিন এসেছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাওনা টাকার জন্য, ওই সময় মহাদেবকে গালিগালাজ করে তিনি ফিরে যান। আমরা আর তাকে রক্ষা করতে পারছিনা আপনারা পারলে পাওনাদারদের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি আরো বলেন মহাদেব পাল তিনি যে এত ভয়ঙ্কর প্রতারক সেটি আমরা আগে জানতাম না। এখন তার বিষয়টি নিয়ে সবার মুখে মুখে রব উঠেছে সে একজন ভয়ঙ্কর প্রতারক ও গোল্ড মাফিয়া।

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। নিবন্ধন নাম্বার (মফস্বল -২০১) © All rights reserved © 2018-2025 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281