সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে খাস কালেকশনের নামে দুর্নীতি : জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগজামালগঞ্জে দেউতান বিলে জাল দিয়ে মাছ আটকের অভিযোগনাসিরনগরে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিতবিশ্বম্ভরপুরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ২ মাস পূর্তিতে শহীদী মার্চ পালনধর্মপাশা উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ফারুক সম্পাদক কবির ছাতকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দোয়ারাবাজারে জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত৩৯ পিস ইয়াবাসহ ০৩ তিন মাদক ব্যবসায়ি গ্রেফতারজামালগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বিএনপি নেতা কামরুল’র মতবিনিময় সভাশান্তিগঞ্জে সাম্য ও মানবিক রাষ্ট্র বিনিমার্ণে যুবদলের লিফলেট বিতরণ

চৌহালীতে যমুনার নদী হতে ড্রেজারে চলছে বালু লুট-হাওড় বার্তা

মোঃ শাকিল আহমেদ
  • সংবাদ প্রকাশ বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন, ২০২১
  • ৬৪৭ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা প্রতিনিধি।

বছরের এই সময়ে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার সাথে-সাথে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলাধীন এনায়েতপুরে একটি প্রভাবশালী চক্র ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত সপ্তাহ খানেক ধরে উপজেলার সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম সিরাজের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি চক্র করছে বালু তোলার মহাৎসব। তবে অবৈধ এ কারবার বন্ধে প্রশাসনের নেই কোন পদক্ষেপ। এ কারনে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পশ্চিম পাড়ে স্রোত আঘাত হানায় এনায়েতপুর স্পার বাধ, তাঁত সমৃদ্ধ অঞ্চল, খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় সহ তাঁত শিল্প এলাকা হুমকীর মুখে পড়েছে। এছাড়া এনায়েতপুরের বাক্ষ্মনগ্রাম হতে দক্ষিনে পাঁচিল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার জুড়ে আবারো ভাঙ্গন তীব্রতর আকার ধারন করায় শংকিত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। এদিকে র‌্যাবের অভিযান ও প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতে ড্রেজার মালিকদের নামমাত্র অর্থদ্বন্ড দেয়ার থামছেনা বালুদস্যুদের দৌরাত্ব। এ অবস্থায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবার কথা জানিয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, যমুনার উপর অত্যাচার থামছেই না সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার সদিয়াচাঁদপুর, স্থল ইউনিয়নে স্থানীয় বালু দস্যুদের। এনায়েতপুরের ১০/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র গত প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ব্যবসার সাথে জড়িত। সরকারী ভাবে বালু মহাল না থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের ও থানার পুলিশের এক শ্রেনীর অসাধু কর্মচারীদের সাথে যোগসাজোশে বছরে অন্তত অর্ধশতাধিক কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছে তারা। এ বালু আবার চক্রটি অন্তত ৬০/৭০ কোটি টাকা বিক্রি করছে বিভিন্ন ভাবে। অনেকের এ ব্যবসার সাথে জড়িত থেকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে রুপান্তর হয়েছে। বর্তমানে এই বালু উত্তোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বালু দস্যুরা। এনায়েতপুর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও চৌহালী উপজেলার সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম সিরাজ, থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চুর নেতৃত্বে ১৪ জনের একটি চক্র নদীর গত এক সপ্তাহ ধরে সুবিশাল কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে মাটি কাটছে। এই ড্রেজার গুলো যমুনার মাঝ নদী সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের গাবেরপাড়া, উড়াপাড়া, মৌহালী, ইজারাপাড়া, সহ আশাপাশের এলাকা থেকে দিনভর তোলা হচ্ছে লাখ-লাখ ঘনমিটার বালু। যা বিক্রি নদীর পশ্চিম পাড়ের এনায়েতপুর ঘাটের উত্তরপাশে নিয়ে বিশাল এলাকায় স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। এখান থেকে ট্রাকে বিক্রি হচ্ছে এনায়েতপুর, বেলকুচি সহ শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে।
এদিকে নদীর ঐসব এলাকার অন্যের জমি থেকে জোড় করে প্রভাবশালী চক্রটি বালু তোলায় কৃষকদের মাঝেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এনিয়ে যেকোন সময় বালু দস্যু ও জমির মালিকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গাবের পাড়ার কৃষক মুল্লুক চাঁন, করিম হোসেন, রাজ্জাক ঘোষ, ধুলিয়াবাড়ির কৃষক আশরাফ হোসেন, মৌহালীর আকবার মোল্লা, সন্তু মিয়া, আছির উদ্দিন জানান, নদীর আমাদের জায়গা থেকে সিরাজ চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা জোড় করে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছে। বন্ধ করতে বলে কোন কাজ হচ্ছেনা। তাদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুতি দ্রুত অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করা হোক। তা না হলে আমরা সবাই সম্মিলিত ভাবে লাঠি-সোটা নিয়ে প্রতিহত করতে যাবো।

অপরদিকে যমুনা থেকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকায় গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পশ্চিম দিকে ধাবিত হচ্ছে। পানি আঘাত হানছে পশ্চিম পাড়ের এনায়েতপুর স্পার বাধ ও দেশের বৃহৎ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান খাজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তীরে। যা বর্তমানে হুমকীর মুখে পড়েছে। একই কারনে প্রচন্ড ¯স্রোতে এনায়েতপুরের বাক্ষ্মনগ্রাম, আরকান্দি, জালালপুরে ভাঙ্গন আরো তীব্রতর আকার ধারন করছে। তাই আতংকৃত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বাক্ষ্মনগ্রামের আজাহার আলী, আবুল হোসেন আরকান্দির মুজাম হোসেন, আবু জাফর জানান, অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে আমরা এখন নিঃস্ব প্রায়। বাকি ঘর-বাড়ি যা আছে তাও রক্ষা পাচ্ছেনা। যমুনা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটায় ¯স্রোত বাড়াতেই এই অবস্থা। আমরা চাই দ্রুত অবৈধ ভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা বন্ধ করা হোক। তা না হলে আমাদের আর রক্ষা নেই। তারা আরো জানান, আমাদের এলাকা রক্ষায় পাউবোর ৭৪৬ কোটি টাকার কাজ একনেকে পাশ হয়েছে। এ কাজ কয়েক মাস পরে শুরু হবে। অথচ নদীতে বালু তোলায় ভাঙ্গন আরো বাড়ায় এ কাজ বাস্তবায়নে আরো বিরম্বনা বাড়বে।

যমুনা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম সিরাজ জানান, আমি এই বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত না। আপনাকে পরে ফোন করবো। আমি ব্যস্ত আছি।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড.ফারুক আহাম্মদ প্রতিবেদক কে বলেন ,
এনায়েতপুরে নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে বিষয়টি আমি শুনেছি । দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলার কোথাও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবেনা। চৌহালীর এনায়েতপুরেও বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করবে প্রশাসন খুব শীঘ্রই ।

ছবির ক্যাপশন-সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনার বিভিন্ন স্থান থেকে জোড় করে ড্রেজার দিয়ে কাটা বালু এনায়েতপুর ঘাটে স্তুপ করে তা বিক্রি করা হচ্ছে।

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। © All rights reserved © 2018-2024 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281