তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
কোন ধরনের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই সাতক্ষীরা জেলা তালায় ভিয়েতনামের গোল্ডেন ক্রাউন, ব্ল্যাকবেবি জাত সহ পাঁচ জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন কৃষক ইকরামুল ইসলাম।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে তালা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা নোনা বিলে মৎস্য ঘেরের বেড়ীবাঁধের উপর মাচা পদ্ধতিতে নতুন এ জাতের তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন এবং সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছেন এই কৃষক । তৃতীয় বারের মতো নতুন জাতের তরমুজ চাষে রীতিমতো সাড়া ফেলেছেন তরুণ এই কৃষক। তরমুজ চাষি ইকরামুল ইসলাম এক কৃষকের মুখের কথা শুনে তিনি বছর আগে প্রথম কয়েক টি গাছ দিয়ে পরিক্ষা মূলক ভাবে এর চাষ পদ্ধতি শুধু করেন। এই যুবক অভিজ্ঞতা ছাড়াই শুরু করেন গোল্ডেন ক্রাউন ও ব্লাকবেবি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ। প্রথমবার নতুন জাতের তরমুজের চাষ করে খুব বেশি লাভবান না হলেও এ চাষে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন কৃষক ইকরামুল ইসলাম। তিনি এবার পাঁচ জাতের বারোমাসি তরমুজ পরিক্ষা মূলক ভাবে চাষ করেছেন । প্রতিটি তরমুজ এক প্যাকেট বীজ প্রায় তিন শত টাকা করে ১৪ থেকে ১৫ শত টাকার বীজ ক্রয় করেছেন।এছাড়া মাচা পদ্ধতি করতে খরচের পরিমাণ দুই হাজার টাকা। এবার তরমুজ চাষ খুব ভালো আশাবাদী ইকরামুল ইসলাম মনে করেন ৭০ হাজার টাকা করে দুই ফলনে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা মুনাফা অর্জন করতে পারবে।বিভিন্ন মৎস্য ঘেরের বেড়ীবাঁধের উপর রোপণ করা বীজ থেকে চারা উঠে দুইপাশে দেয়া বাঁশের তৈরি মাচার উপরে বড় হয়েছে গাছ। গাছে ঝুলছে গোল্ডেন ক্রাউন , ব্ল্যাকবেবি জাতের ও ইউএলো জাতের তরমুজ। গাছ থেকে যেনো ফলগুলো ছিঁড়ে না পড়ে এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে নেটের ব্যাগ। এতে করে পাকাপোক্ত না হওয়া পর্যন্ত দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারেন চাষি।
জানা গেছে, গোল্ডেন ক্রাউন জাতের তরমুজের ওজন হয় এক থেকে দেড় কেজির মধ্যে আর ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ দেড় থেকে তিন কেজি হয়। তাই মাচায় ঝুলে থাকা ফলগুলো নেটের ব্যাগেই বেঁধে রাখতে হয়। ফলে খেতের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় যতদিন ফল থাকে।
চারা রোপণের ৬০-৭০ দিনের মধ্যেই ফলন আসে এবং ফল পরিপক্ক হয়ে যায়। স্থানীয় বাজারে প্রতিটি গোল্ডেন ক্রাউন তরমুজ কেজি প্রতি ৬০ টাকা আর ব্ল্যাকবেবি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সুমিষ্ট ও রসালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি।
ভিয়েতনামের গোল্ডেন ক্রাউন ও ব্ল্যাকবেবি জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষে ইকরামুল ইসলাম সফলতায় আশপাশের কৃষকরাও এ তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাবেক ছাত্রনেতা মো: রিপন মোড়ল ,।
বাজারে এ জাতের তরমুজের ব্যাপক চাহিদা জানিয়ে তালা বাজারে ব্যবসায়ী মো: রানা এই জাতের তরমুজ জেলার আর কোথাও চাষ হয়নি তবে তালা উপজেলায় চাষ হচ্ছে। বারোমাস বাজারে পাওয়া গেলে চাহিদা আরো অনেক বেড়ে যাবে।
কৃষক মো: ইকরামুল ইসলাম জানান, অ সময়ে বারো মাসি এই তরমুজের চাহিদা অনেক বেশি। ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। ফলে বাজারজাত করা নিয়ে বাড়তি কষ্ট করতে হয় না। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে ব্যাপক আকারে এ তরমুজ চাষের চিন্তা আছে। এ জাতের তরমুজ চাষের নিজের সাফল্যের ব্যাপারেও আশাবাদী এ চাষি।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান গোল্ডেন ক্রাউন ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ চাষ। এগুলো বেশ সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে এ তরমুজের চাহিদা অনেক বেশি। নতুন এ জাতের তরমুজ চাষের জন্য আমরা এখন থেকে কৃষকদের পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ দেব। এ জাতের তরমুজ অনেক লাভজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: নুরুল হক, শহিদ মিয়া