হাওড় বার্তা
অজুদ আহমদঃ- কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের যোগিবিল গ্রামের সবচেয়ে অনগ্রসর দরিদ্র শব্দকর পরিবারের সন্তান প্রশান্ত শব্দকর উচ্চ শিক্ষা নিয়ে পরিবারের হাল ধরতে চান, ঘোছাতে চান অভাব অনটন।
ছোটবেলায় বাবা ঈরেশ শব্দকরকে হারিয়েছেন। মা অন্যের ঘরে কাজ করে সংসার ও পড়াশোনার খরচ বহন করেন। কিন্তু লেখাপড়ার খরচ চলবে কি করে? বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সংসার চালানো নিয়ে চিন্তায় পড়েন মা, কি করবেন, কিভাবে চলবেন, কিভাবে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যাবেন।
প্রশান্তদের পরিবারে ৫ সদস্য। বড় ভাই একটা ফার্মেসিতে কাজ করেন, তিনি পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন, পরিবারের কোন সহযোগীতাও করেন না। মা অসুস্থ শরীর নিয়ে বাড়ি বাড়ি কাজ করেন। কিন্তু লেখাপড়া করতে চাই। আগ্রহের কমতি নেই, মেধাও রয়েছে। সুতরাং হাল ছাড়া যাবে না। লেখাপড়া করতে হবে, পরিবারের হাল ধরতে হবে বললেন প্রশান্ত শব্দকর।
প্রশান্ত জানায়- তার চেষ্টারও কমতি নেই। কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় ‘গোল্ডেন এ-প্লাস’ পরবর্তীতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ৪.৮৫ এবং এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ‘গোল্ডেন এ-প্লাস’ পায়। গোল্ডেন এ-প্লাস পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুঃচিন্তায় দিন যাচ্ছে মেধাবী ছাত্র প্রশান্ত শব্দকরের।
ফলাফল প্রকাশের পর আলাপকালে প্রশান্ত জানায়, ‘কি করবো আমি বুঝতে পারছি না? ছোট বেলা থেকেই কষ্ট করে আসছি। কখনও কখনও না খেয়ে স্কুলে গিয়েছি কিন্ত বাদ দেইনি স্কুল ও কলেজের পড়াশোনা। এখন পড়ালেখা ও সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য স্যারেরা সাহায্য করেছেন, কলেজে ভর্তি হওয়ার পর কলেজ অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন জন সহযোগিতা করেছে। আমি তাদের কাছে সারাজীবন ঋণী হয়ে থাকবো। আমি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। কিভাবে ভর্তি হবো, কিভাবে কি করবো বুঝতেছি না।’
প্রশান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলে পরবর্তীতে সে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে এলাকার ও দেশের জন্য কাজ করতে চায়। তবে তার মধ্যে আশঙ্কা কাজ করছে দারিদ্রতা তাকে এ সুযোগ করে দিবে কিনা তা ভেবে।
প্রশান্ত বলেন- ‘এখন কোচিং চলছে কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য নাই যে ভর্তি হবো। আমি বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চাই আমাকে পড়ালেখা করার সুযোগ করে দিন।’
এ বিষয়ে কথা হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিয়াজ মুর্শেদ রাজু বলেন, ‘প্রশান্ত শব্দকর আমার ইউনিয়নের। সে যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য আমি ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করবো।’
আলাপকালে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রশান্তকে সহযোগীতা করা হবে
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।