শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:২৭ অপরাহ্ন

সিলেট সদর উপজেলার হাতুড়া এলাকায় কৃষি জমির মাটি কেটে সাবাড়

হাওড় বার্তা ডেস্ক
  • সংবাদ প্রকাশ বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

ক্রাইম প্রতিবেদক : সিলেট সদরের বটেশ্বর এলাকার হাতুড়া-চুয়াবহর এলাকায় শীত মৌসুমে অবৈধভাবে মাটি কেটে একটি মহল পরিবেশের বিপর্যয় ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সিলেটের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়সহ অন্যান্য সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দফতরে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শাহপরাণ থানার চুয়াবহর হাতুরা গ্রামের সৈয়দ আরজান আলীর ছেলে সৈয়দ রুহুল আমিন ( ৩৯)।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বটেশ্বর মৌজার প্রায় ১লক্ষ ৯৮ হাজার ৭২০ শতক কৃষি জমির মধ্য থেকে এসএ খতিয়ান ১০৬১, ১০৬৩, ১০৭৮, ১০৮৪, ১০৯২, ২১০৫, ২১১০, ২১১২ ও ২১১৪ নম্বরের বিভিন্ন দাগের সরকারি খাস জমি, খালবিল, নালাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে এক্সেভেরটর দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে বিভিন্ন ইটভাটাসহ অন্যান্য কাজে বিক্রি করছেন এই এলাকার হাতুরা গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলীর ছেলে কামাল উদ্দিন (৪৫), মৃত ফরিজ আলীর ছেলে সুহেল আহমদ (৪০) ও সুফিয়ান আহমদ (৩০), আতাউর রহমনের ছেলে খাদিমপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজান উদ্দিন, মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে আশরাফ উদ্দিন রাজিব (৩৫), মৃত রিয়াছদ আলীর ছেলে সাবেক মেম্বার এনামুল হক এনাম। সাধারণ মানুষ বাধা দিলেও তারা কোন বাধা না মেনে উল্টো নানাভাবে হয়রানি করেন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি ও সরকারি খাস জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করে তারা এখন লাখ লাখ টাকার মালিক। কেউ কেউ কোটিপতিও হয়েছেন। প্রতি বছর শীত মৌসুম এলেই তাদের মাটি বহনের ট্রাকসহ্য অন্যান্য যানবাহনের কারণে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারেন না। ধুলো উড়িয়ে এমন যন্ত্রণাদায়ক অবস্থার সৃষ্টি করা হয় যে, মানুষ ঘুমাতেও পারেন না। বিষয়টি নিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর তাদের সাথে রুহুল আমিন কথা বলতে চাইলে তারা তাকে প্রণানাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে শাহপরাণ থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও করেন তিনি। কিন্তু এখনো পুলিশের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলেও জানান তিনি। তাছাড়া গত ৭ জানুয়ারি বাড়ি যাওয়ার পথে রেজান উদ্দিন ৫ দিনের মধ্যে জিডি প্রত্যাহার না করলে ট্রাক দিয়ে পীষে মারা ও পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি সাধনের হুমকি দেন।

এতসব হুমকি ধমকি পেয়ে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিনি বাধ্য হয়ে এসএমপি কমিশনার বরাবর গত ৮ জানুয়ারি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তিনি এলাকাবাসীর স্বার্থ, পরিবেশ ও কৃষিজমি সুরক্ষা এবং তার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নিরপত্তা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি জোর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন কৃষি জমির মাটি কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিবেদককে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সরকারি কোন জমি নয়। ব্যক্তি মালিকানাধিন খাল বিল থেকে কিছু মাটি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেয়া অভিযোগটি তদন্তের জন্য সহকারি ভূমি কমিশনার ফারিয়া সুলতানাকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

তবে কাজ শুরু করেছেন কি না, এ তথ্য দিতে অস্বীকার করেছেন এই কর্মকর্তা। বলেন, আমি কেন আপনাকে তথ্য দিবো? আপনি কোন পক্ষের লোক কিভাবে বুঝবো?

একজন সাংবাদিক হিসাবে তথ্যটা জানা দরকার বলে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি এ বিষয়ে শামুকের মুখ বন্ধের মতো চুপ থাকেন এবং লাইন কেটে দেন। তার বিরুদ্ধে যে, এই অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠছে, সেই প্রশ্নের কোন সুযোগই দেন নি তিনি। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় তিনি কি সত্যি এই মাটি ব্যবসায়ীদের আশ্রয়দাতা?

আর করোনা আক্রান্ত জেনেও সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারের মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

এদিকে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত ব্যাপারে শাহপরাণ থানায় রুহুল আমীনের দায়েরকৃত জিডি সম্পর্কে অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আনিসুর রহমান তাৎক্ষনিক কিছু জানাতে পারেন নি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

তবে কাজ শুরু করেছে পরিবেশ অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয়। বিভাগীয় পরিচালক এমরান হোসেন জানান, এ ব্যাপারে শুনানির জন্য আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বার্তা প্রেরক:
সৈয়দ রুহুল আমিন
মোবাঃ ০১৭১২৪২৯৭১৫

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। © All rights reserved © 2018-2024 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281