(সাজন বড়ুয়া সাজু)
বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধজগতে এই মহান পূর্ণিমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম মহিমায় অবিস্মরণীয়। শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা মানব ইতিহাসে একটি মহিমান্বিত দিন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা বিশ্বের সমগ্র বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে মহা পবিত্রতম একটি উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। বৈশাখী পূর্ণিমা দিনটি বুদ্ধের ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত। এ দিনেই অহিংসা ও শান্তির দিশারী মহামানব গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহা পরিনির্বাণ লাভ করেন। বুদ্ধ জীবনের মহান এ তিনটি প্রধান ঘটনাই মানব বিশ্বের ইতিহাসে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ নামে অভিহিত।
এদিন সমগ্র বিশ্বের বৌদ্ধরা বুদ্ধের জীবনদর্শনকে গভীরভাবে অনুধাবন করেন। বিশ্বের বৌদ্ধরা এ দিনটি অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এবং উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন। এই পবিত্র তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীগণ বুদ্ধ স্নান করেন, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন। ভক্তগণ প্রতিটি মন্দিরে বহু প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, ফুলের মালা দিয়ে মন্দিরগৃহ সুশোভিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হন।
এছাড়া বুদ্ধগণ এই দিনে বুদ্ধ পূজার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা করে থাকেন। বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভ করে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ঘোচানোর জন্য মানবতা ও সার্বজনীন সাম্য ও অহিংসা বাণী প্রচার করেন এবং আর্ত-পীড়িত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও শিক্ষা ছিল মানুষের নিরঙ্কুশ অধিকার। স্বাধীনতা, সর্বাঙ্গীন কল্যাণ এবং সর্বপ্রাণীর নিরাপদ বিশ্ব সৃষ্টি করা। তিনি প্রচলিত জাতিভেদ প্রথায়ও আবদ্ধ হননি, তিনি সর্বশ্রেণির মানুষের নিকট মুক্তির বাণী তুলে ধরে জগতে এক নতুন ধর্মাদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন।
এই মহান বু্দ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী পৃথক বানী ও দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। ‘অহিংস পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল থেকে এদেশে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘ্নে পালন করে আসছেন। এই দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত আনন্দ ও প্রীতির মাধ্যমে উদ্যাপন করে থাকে। এই বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে। আমাদের এই সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে সমুন্নত রাখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: নুরুল হক, শহিদ মিয়া