বিশেষ প্রতিনিধি (সুনামগঞ্জ)
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সবগুলো (৮ টি) ইউনিয়নের ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ নভেম্বর। স্থানীয় এই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাড়তি আমেজ বিরাজ করছে ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে। প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের মূল প্রতিপক্ষ বিদ্রোহীরা। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন অন্তত ১২ জন। তবে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের বিজয়ে বাঁধা হবে না বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীলরা। বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪৩ জন প্রার্থী। উপজেলার সকল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মূল প্রতিপক্ষ দলীয় পদধারী নেতাসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন এমন অন্তত ১২ জন প্রার্থী।
উপজেলার শিমূলবাঁক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান জিতুকে (নৌকা) চ্যালেঞ্জ করে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ মিয়া (চশমা) ও শাহীনুর রহমান (আনারস)।
জয়কলস ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মাসুদ মিয়ার (নৌকা) সঙ্গে বিদ্রোহী হিসাবে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাছিত সুজন (ঘোড়া), উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রাজা মিয়া (টেবিল ফ্যান) ও যুবলীগ নেতা হাছান মাহমুদ তারেক (মোটর সাইকেল)।
পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জগলুল হায়দারের (নৌকা) সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়া বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক (আনারস)।
পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে দলের মনোনীত প্রার্থী রাশিকুল ইসলামের (নৌকা) সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন (মোটর সাইকেল) ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন (টেবিল ফ্যান)।
দরগাপাশা ইউনিয়নে দলের মনোনীত প্রার্থী মনির উদ্দিনের (নৌকা) সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়া মাছুদুল হাসান দুলন (আনারস)।
পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম (নৌকা)। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন রুবেল মিয়া (আনারস)। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচনী প্রচারণা করে আসছিলেন তিনি।
পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট দেবাংশু শেখর দাসের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা সফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) এবং পাথারিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামছুল ইসলাম রাজা (নৌকা) এর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম (ঘোড়া) ।
নির্বাচনীয় মাঠে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীর সরব লড়াইয়ে বিপাকে রয়েছেন দলের মনোনীত প্রার্থীরা। প্রচার প্রচারণা থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানামূখী প্রচারণার মাধ্যমে নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে চাচ্ছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী জগলুল হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নুরুল হকও প্রতিযোগীতা করেছেন। কিন্তু দল আমার কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। ওনার উচিৎ ছিল বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতিকের প্রতি আস্থা রেখে আমাকে সহযোগীতা করা। কিন্তু তিনি নৌকা প্রতিকের বিরোধীতা করছেন। তবে জনগণের নৌকার বিজয়ে কেউ বাঁধা হতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা বিদ্রোহী হয়েছেন তাদের দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।