বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসের এডি’র ইন্ধনে আনসার সিন্ডিকেটই এখন বড় দালাল 

কে এম শহীন রেজা
  • সংবাদ প্রকাশ বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১
  • ৪৯৪ বার পড়া হয়েছে

 কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি

করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন থাকায় কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম সীমিত আকারে চলছিল। বর্তমানে পুরোদমে চলছে কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। জেলার হাজার হাজার পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।

এই সুযোগে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের জিম্মি করে আনসার সদস্য কালাম ওস্তাদ, আনিস, মোমিন ও রফিককে দিয়ে সহকারী পরিচালক জাহিদুল হক নিজেই জড়িয়ে পড়েছেন ঘুষ বানিজ্যে। তারই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার আনিস নামের এক আনসার সদস্য অর্থসহ সাংবাদিকদের কাছে হাতেনাতে ধরা খেলো। মূলত পাসপোর্ট অফিসে এখন কোন দালাল নেই সহকারী পরিচালকের ইন্ধনে আনসার সদস্যরা এখন দালালে রূপান্তরিত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা প্রতিবেদককে বলেন।

পাসপোর্ট অফিসের মূল ফটকে অবস্থানরত আনসার সদস্যরা পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র চেক করতে দেখা যায়, মূলত কাগজপত্র দেখার কোনো এখতিয়ার তাদের নেই তবুও সহকারি পরিচালকের ইন্ধনে তারা প্রতিটা পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের কাগজের কমতি দেখিয়ে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। আর এই কাজে সহকারী পরিচালককে সরাসরি সহযোগিতা করছে পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত আনসার সদস্যদের। আনসার সদস্যরা মূল ফটকে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কি পরিমান অর্থ আদায় করছে তা সিসি ফুটেজে সহকারী পরিচালক নিজের রুমে বসেই দেখছেন। অথচ তিনি নীরব কেন? সকলের মনে একটাই প্রশ্ন? তার ইন্ধনে এই সকল অবৈধ কাজ কর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছে আনসার সদস্যরা।

এ বিষয়ে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে অফিস খোলায় পাসপোর্টের কার্যক্রম করতে বিভিন্ন ধরনের কারন দেখিয়ে নানাভাবে আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। কখনো বলা হচ্ছে সারভার বন্ধ। আবার কখনো বলছে, কাগজপত্র কমপ্লিট হয়নি। দৌলতপুর থেকে আসা এক পাসপোর্ট প্রত্যাশী আরো জানায়, অফিসের গেটে আনসার সদস্যরা আমাদেরকে আড়ালে ডেকে সরাসরি ঘুষ দাবী করে বলছে, সব কাগজপত্র ঠিক হয়ে যাবে, সারভারেও কোনো সমস্যা থাকবে না, শুধু পাসপোর্ট প্রতি ১২শ থেকে ১৫শ টাকা দিতে হবে। যে আগে টাকা দিবে তার কাজ আগে হবে আর যে পরে টাকা দেবে তার কাজ পরে হবে, আর যে টাকা দেবে না তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের এমন বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে পাসপোর্ট অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেটে অবস্থানকারী আনিস নামের এক আসনার সদস্য পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের আড়ালে ডেকে সরাসরি ঘুষ দাবী করছে এবং ঘুষের টাকা গ্রহন করছে।

এবিষয়ে ঘূষ গ্রহনকারী আনসার সদস্য আনিসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো ঘূষ দাবী করছি না। পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা খুশি হয়ে আমাকে মিষ্টি খেতে টাকা দিয়ে যাচ্ছে। অত:পর এক পাসপোর্ট প্রত্যাশীকে আনসার সদস্যসের মুখোমুখি করে ঘুষের টাকার বিষয়ে জিঞ্জাসাবাদ করলে, আনসার সদস্য সরাসরি সহকারী-পরিচালকের রুমে নিয়ে যায় সাংবাদিকদের। তার রুমে নিয়ে গিয়ে সবকিছুর দোষ চাপালেন এডির উপর। আনসার আনিস সকলের উপস্থিতিতে বলেন, আমি কিছুই জানি না, সব স্যার জানে।

তারমানে একটাই প্রশ্ন দাঁড়ায়, সহকারি পরিচালক এর নির্দেশে আনসার সদস্যদের দিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে বহিরাগত দালালদের হটিয়ে নিজেদের সদস্যদেরকে দালাল বানিয়ে দিনের দিন ফিঙ্গার দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী-পরিচালক জাহিদুল হক বলেন, এই অফিসে ঘুষ বানিজ্য চলছে বলে আমি শুনেছি । তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবে আপনারা যেহেতু ঘূষ বানিজ্যের প্রমানসহ আমার কাছে এসেছেন আমি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবো।

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। © All rights reserved © 2018-2024 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281