ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বারী বৃষ্টিপাতের কারনে সুনামগঞ্জের ছাতকে হাওর পাড়ের মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে এক অজানা আতংক। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি হাওরে ঢলের পানে প্রবেশ করে বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। বাধেঁর কানায়-কানায় পানি পানি চলে আসায় হুমকির মুখে রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি হাওর। শঙ্কায় কাটছে কৃষক পরিবারের প্রতিটি দিন। অনেক হাওরে বাধেঁর উপর রাতভর কৃষকরা পাহারা দেয়ার খবরও পাওয়া গেছে। সোমবার রাত থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নুতন আশায় আবারো বুক বেধেঁছেন কৃষকরা। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ছোট-বড় মোট ৬৮টি হাওর রয়েছে। এরই মধ্যে অন্তত ১৫টি হাওরের শতাধিক হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। আরো ২৫টি হাওরের বোরো ফসল পড়েছে হুমকির মুখে। বর্তমানে পানি ক্রমহ্রাসমান অবস্থায় রয়েছে। গত কয়েক দিনে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারনে সুরমা, চেলা ও পিয়ানই নদীর পানি আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এখানের হাওর পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপজেলা ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়া-পাগুয়া হাওরের ২০ হেক্টর, চরমহল্লা ইউনিয়নের নাগা উন্দা হাওরের ১৬ হেক্টর, বিংগা হাওরের ৫ হেক্টর, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের পুটিয়া হাওরের ১০ হেক্টর ও দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের জল্লার হাওরের ১০ হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ ছাড়াও দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের যমুনা খাই হাওর, পাতলা চুরা হাওর, দলা হাওর, নেয়ারাই ইউনিয়নের চাউলীর হাওর, ইসলামপুর ইউনিয়নের নলখাই হাওর, মুতিয়ার হাওর ও ছৈদাবাদ গ্রামের পুবের হাওর, পানি প্রবেশ করেছে। হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মুর্তার হাওর, নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর, কুইয়াদল হাওর, চাতল হাওর, চন্দাই হাওর, গোয়ালকই হাওর, ছাতক সদর ইউনিয়নের বড়বাড়ি হাওর, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের জুলিয়া হাওর, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের তালের হাওর, উত্তর খুরমার ডেকার হাওর, দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের জুলিয়ার হাওর, রাখা হাওর, চরমহল্লা ইউনিয়নের চৌলার হাওর, ডাবনিাকান্দির হাওর, বুরাইগিরী হাওর, মৌয়ালু হাওর, ঝালিয়ার হাওর, জাউয়া ইউনিয়নের কুঁড়িবিল ও সুড়িগাঁও হাওর, সিংচাপইড় ইউনিয়নের ইন্দুয়ার হাওর, পাটরি হাওর, কুমারকান্দ হাওর, দোলারবাজার ইউনিয়নের চাতলবিল হাওর, পাঁচবিল হাওর, দশমিশা হাওর, ভাতগাঁও ইউনিয়নের খঞ্জনপুর হাওর, হিলাকুঁড়ি হাওর ও কাচি হাওর। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তৌফিত হোসেন খান শতকরা ৮০ ভাগ পাকা ফসল কাটার পরামর্শ দিয়ে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এখানে ১৪ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কর্তন করা হয়েছে প্রায় ৫ হেক্টর জমির ফসল। আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। বর্তমানে পানি ক্রমহ্রাসমান অবস্থায রয়েছে। দ্রুত পানি সরে গেলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। তিনি কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।