স্টাফ রিপোর্টার
রাজউকের কথিত ইঞ্জিনীয়ার প্রতারক চোর মোঃ আরিফ হোসেন কুষ্টিয়া জেলার হরিকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত ইলিয়াস হোসেনের ছেলে, তার মায়ের নাম মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন। পড়ালেখা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যন্ত করলেও আরিফ নিজেকে রাজউকের ইঞ্জিনীয়ার আই ই বি মেম্বার হিসেবে পরিচয় দেয়। রাজউক ইতিমধ্যেই একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিন্নিহিত হয়েছে আরিফ হোসেনের মতো ভয়ঙ্কর প্রতারকের জন্য।
কথিত ইঞ্জিনিয়ার আরিফ অতীতে একাধিক বিল্ডিং মালিকের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে রাজউকের কাছে বিল্ডিং অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে। প্রতারক আরিফ হোসেনের ফাঁদে পা দিয়ে একাধিক বিল্ডিং মালিক হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সর্বশেষ প্রতারক আরিফ হোসেন জেড টু কনসালটেন্সি সলিউশন নামক একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনীয়ার জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এর কাছে সাত লক্ষ টাকা নিয়েছেন ঢাকার মিরপুর ডিওএইচএস এর ভিতর একটি বিল্ডিংয়ের ডিজাইন ড্রয়িং করার চুক্তিতে। প্রতারক আরিফ টাকা গ্রহণের পর থেকেই ডিজাইন ড্রয়িং না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করে আসতেছিলো। টালবাহানার একপর্যায়ে প্রতারক আরিফ কিছু ডিজাইন ড্রয়িং প্রদান করেন ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলামকে। উক্ত ডিজাইন ড্রয়িং রাজউক সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অফিসে প্রদান করা হলে যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় ডিজাইন ড্রয়িং সম্পূর্ণ ভুয়া।
উক্ত ডিজাইন ড্রইংয়ে যে সকল ইঞ্জিনিয়ারের নাম ও সিল-স্বাক্ষর ব্যবহার করেছে তা সবকিছুই ভুয়া। এমতাবস্থায় প্রতারক আরিফ হোসেনকে সঠিক ডিজাইন ড্রয়িং প্রদান করতে বলা হলে সে নিজেকে আড়াল করে ঢাকা ত্যাগ করে আক্তগোপন করে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ করে রাখে। এমতাবস্তায় ইঞ্জিনীয়ার জাহিদুল ইসলাম গাজীপুর মেট্ট্রোপলিটনের আওতাধীন গাছ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি দায়ের করে এবং প্রতারক আরিফের দেওয়া ভিজিটিং কার্ডের ঠিকানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আরিফ সেই বাড়ি থেকে ৬ মাসের ভাড়া না দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে তার কথিত স্ত্রী সহ। তারপর ইঞ্জিনীয়ার জাহিদুল ইসলাম প্রতারক আরিফের মোবাইল নাম্বার ও উক্ত ডায়েরির কপি সিআইডিতে প্রদান করে করলে সিআইডি প্রতারক আরিফের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা ইঞ্জিনীয়ার জাহিদুল ইসলামকে প্রদান করে। সিআইডি কর্তৃক ঠিকানায় গিয়ে প্রতারক আরিফের সাথে দেখা করে ইঞ্জিনীয়ার জাহিদুল ইসলাম। আবারো সঠিকভাবে ডিজাইন ড্রয়িং প্রদান করার প্রতারক আরিফ কে অনুরোধ করে কিন্তু আরিফ ডিজাইন ড্রয়িং প্রদান না করে উল্টা হুমকি প্রদর্শন করে ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলামকে।
এমতাবস্তায় ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বাংলাদেশ সংবাদ প্রতিদিন এর সাথে কথা বলে ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম জানান- তিনি আদালতে মামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন প্রতারক আরিফের বিরুদ্ধে। উত্তর বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট কম এর গাজীপুর বিশেষ প্রতিনিধি গাছা থানার ডিউটি অফিসারের সাথে কথা বললে ডিউটি অফিসার উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। জানান- আদালতে প্রতারক আরিফের বিরুদ্ধে সকল তথ্যা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলামকে সহায়তা করবেন। গাজীপুর বিশেষ প্রতিনিধি কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসির সাথে কথা বললে তিনিও এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- ভিকটিম মামলা করলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে টাকা উদ্ধার অভিযানে নামবো। সেই সাথে গাজীপুর প্রতিনিধি প্রতারক আরিফের বাড়ির আসেপাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আরিফ বিয়ে করেনাই, আরিফ বিভিন্ন সময় একেকটা মেয়ে নিয়ে চলাফেরা করে। প্রতারক আরিফ কুষ্টিয়ায় থাকাকালীন অনেক মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ড্রয়িং-ডিজাইন দেওয়ার কথা বলে। প্রতারক আরিফকে বিভিন্ন সময় এইসকল প্রতারণায় সহযোগিতা ও সমর্থন করে আসতেছে কুষ্টিয়া পৌরসভার হরিকৃষ্ণপুর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাচ্চু। সাচ্চু সাবেক বিএনপি ক্যাডার বর্তমান আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছে মাদক ব্যবসার নেটওয়ার্ক। সাচ্চুর ভয়ে প্রকৃত আওয়ামীলীগ নেতারা এখন আতংকে দিনপর করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা জানায়।
সেই সাথে ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম উত্তর বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট কম কে জানান ভয়ঙ্কর প্রতারক আরিফ হোসেনের থেকে দেশবাসীকে সাবধান থাকতে। জানা যায়, প্রতারক আরিফ বর্তমান জেলে থাকা প্রতারক সাহেদ করিম এর আর এক ভয়ঙ্কর প্রতারক। আরিফ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতা ও সরকারি অফিসারের সাথে সেলফি তুলে নিজেকে উক্ত নেতার বা অফিসারের ঘনিষ্ট বলে পরিচয় দেয়।
উত্তর বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট কম প্রতারক আরিফ হোসেনের ব্যাপারে জানতে পারেন- প্রতারক আরিফ অতীত কর্মস্থল থেকে প্রজেক্টের টাকা অক্তসাৎ ও প্রোজেক্ট এর মালামাল চুরির দায়ে চাকরীচূত হয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।