সারাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। মেগা মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হচ্ছে। উড়াল সেতু হচ্ছে। পদ্মা সেতু হচ্ছে। পানির নিচে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে। শিল্প-কারখানা হচ্ছে। বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে। ট্যাকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ হচ্ছে। কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। গ্রাম হচ্ছে শহর। কিন্তু আমার জন্মভূমি ছাতক-দোয়ারা দিন দিন তলিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার বেহাল অবস্থা। ব্রীজ নেই, কালভার্ট নেই, শিল্প-কারখানা নেই, কর্মসংস্থান নেই, চতুর্দিকে নেই নেই এর মিছিল। কোথাও কিছু নেই। আমিও আপনাদের মতো ছাতক-দোয়ারা তথা (সুনামগঞ্জ-৫) আসনের পরিবর্তন চাই, উন্নয়ন চাই,কর্মসংস্থান চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উন্নয়নের সুষম বণ্টন চাই। শান্তিপূর্ণ ছাতক-দোয়ারা চাই। যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি রুখতে চাই। পরিকল্পিত শিল্প-কারখানা চাই। সুখ শান্তিতে বসবাসের গ্যারান্টি চাই।
আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার মাঝি টানা চার চারবারের আওয়ামীলীগের এমপি। প্রতিবারই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী। যার সুবাদে সারা দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে, তৈরি হচ্ছে অবারিত কর্মসংস্থান। একসময়ের মঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোও সমৃদ্ধ। কর্মমুখর। খরা-বন্যা উধাও। সেই তুলনায় আমারা দুর্নীতির অতল তলে নিমজ্জিত। শিল্পনগরী খ্যাত ছাতক আজ অপউন্নয়নের বাগাড়। দোয়ারাবাজার জনবিচ্ছিন্ন। কোনো একটি সংযোগ সড়ক ভালো নাই। সব-কটি রাস্তা চলাচল অনুপোযোগী। কেন? এর জন্য কে দায়ী? এই ২০ বছরে ছাতক-দোয়ারার এতো অবনতি কেন? এতো মামলা-হামলা, খুন, ধর্ষণ কার ইশারায়?
যেখানে কালভার্টের প্রয়োজন সেখানে কালভার্ট নেই। যেখানে ব্রিজ দরকার সেখানে ব্রিজ না দিয়ে মাটি ভরাট। যেখানে আদৌও কোনো বেড়িবাঁধ দরকার নাই সেখানেও অপরিকল্পিতভাবে দেওয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধ। এ যেন টাকা কামানোর অসুস্থ মচ্ছব! ফলে প্রতিবছর অকাল বন্যায় ভেসে যায় আমার প্রিয় ছাতক-দোয়ারা। ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ঘরবাড়ি থেকে নিয়ে ফসল। এ যেন কেউ দেখার নেই! অভিভাবকশূণ্য আমার ছাতক-দোয়ারা। এ থেকে মুক্তি পেতে মুক্তি পাগল ছাতক-দোয়ারার মানুষ বহুবছর থেকে বারবার আবদার করে আসছেন আমি যেন নির্বাচনে আসি। দুর্গত ছাতক-দোয়ারাকে স্বনির্ভর করার চেষ্টা করি।
মুরুব্বিদের আদেশ, আমার নেতা কর্মীদের আবদার, তরুণদের অনুরোধে বিগত নির্বাচনে আমি আওয়ামিলীগের মনোনয়ন চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন না দিলে নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার দোলাচালে যখন ভাসছিলাম। সবাইকে নিয়ে পরামর্শ করছিলাম। ঠিক তখনই জনাব এম পি সাহেব, আমার অগ্রজ ছাতক পৌরসভার চার চারবারের মেয়র জননেতা জনাব আবুল কালাম চৌধুরীকে নিয়ে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, শামিম আমার ছোট ভাই। প্রাণোচ্ছল তরুণ। এবারের নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন। আগামী টার্মে বেঁচে থাকলে আমি শামিমের হয়ে নির্বাচন করবো। শেষ বয়সটাতে লজ্জা দিও না, ভাই। তখন আমি তাঁর কথায় বিশ্বাস করে দিনরাত একসাথে থেকে তাঁর পক্ষে হাটে-মাঠে, গ্রাম-গঞ্জে, নগরে-বন্দরে চষে বেড়াই।
সবাইকে আশ্বস্ত আশ্বস্ত করি এই নির্বাচন উনার শেষ নির্বাচন। অতীতের ভুল হবে না। কাঙ্খীত উন্নয়ন হবে। দূর্ভাগ্যবশত উনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েই তার পুরনো রূপে ফিরে যান। সকল প্রতিশ্রুতি বেমালুম ভুলে যান। সেই পুরনো খলিফাদের নিয়ে কালো টাকা কামানোর ধান্ধায় মাথা বেঁধে ঝাপিয়ে পরেন। ফলশ্রুতিতে যা হবার তা-ই হলো। আমরা হলাম উন্নয়ন বঞ্চিত। তিনি ও তার খলিফারা হলেন টাকার কুমির!
এবারও আমি আপনাদের সকলের দোয়া ও পরামর্শ নিয়ে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলাম। শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম প্রতীক পাবো। কিন্তু অদৃশ্য এক কারণে এম পি সাহেবের সম্পূর্ণ বলয় প্রতীক বঞ্চিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতে পায়ে ধরে উনি প্রতীক নিয়ে আসেন। আল্লাহ সহায়, বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন শামিম তুমি সতন্ত্র প্রার্থী হও। নির্বাচন করো। জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সংসদে আসো, আমার দোয়া আছে। তাই ঢাকা এসেই আপনাদের পরামর্শ নিয়ে মনোনয়ন জমা দেই। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে, আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে পুরো ছাতক-দোয়ারা এখন পরিবর্তনের হাওয়ায় দুলছে। সবাই আমাকে তার সন্তানের মতো, ভাইয়ের মতো ও বন্ধুর মতো বুকে টেনে নিচ্ছেন। এজন্য আমি ও আমার পরিবার আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আমি বিশ্বাস করি আমার প্রতিপক্ষ কেউ নেই। যারা আছেন আমরা একই ফুলের পাপড়ি। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হয়তো আমার বা আমার পরিবার নিয়ে অসত্য বক্তব্য রাখছেন। এটাকে আমি বড় করে দেখছি না। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি সাত তারিখ আমাকে আপনাদের সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিজয়ী করেন আমি সবকিছু ভুলে গিয়ে, দল-মতের উর্ধ্বে ওঠে সবাইকে সাথে নিয়ে অবহেলিত ছাতক-দোয়ারাকে মডেল ছাতক-দোয়ারা হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। আমি বা আমার পরিবার কোনোদিন নির্বাচনী প্রতিপক্ষকে শত্রু মনে করি না। গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হিসেবে দেখি। সুতরাং কারো প্ররোচনায় আমাকে ভুল বুঝবেন না। সাত তারিখ পরে বুঝবেন আমার বুক কতোটা প্রশস্ত। পক্ষ-বিপক্ষ না দেখে ছাতক-দোয়ারার উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে আমার বুকে স্থান দেবো ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন তাহলে ছাতক-দোয়ারার মানুষ পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসুন। সুখ ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাক আমার প্রিয় জন্মভূমি ছাতক-দোয়ারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।