শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২০ পূর্বাহ্ন

মনিরামপুরে জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত

আব্দুল্লাহ আল-মামুন
  • সংবাদ প্রকাশ সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি 

বেঁচে থেকেও মৃত পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা।চার বছর ধরে রোগাক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার দিগঙ্গা গ্রামের পটল মণ্ডল (৭০)। বাস্তবে এই বৃদ্ধা জীবিত হলেও সমাজসেবা অফিসের কাছে তিনি মৃত। পটল মণ্ডলকে মৃত দেখিয়ে দেড় বছর আগে তাঁর ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা সমাজসেবা অফিস।

এর ফলে বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র এই বৃদ্ধা।

পটল মন্ডলের পরিবারের অভিযোগ, হরিদাসকাটি ইউনিয়ন সমাজকর্মী লোকমানুল হক মৃত দেখিয়ে বৃদ্ধা পটল মন্ডলের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। অনেকবার এ সমাজকর্মীর দ্বারস্থ হয়েও ভাতা চালু করতে পারেনি তাঁরা। তবে লোকমানুল হকের দাবি বিষয়টি তিনি জানেন না।

 

সরেজমিনে দিগঙ্গা গ্রামে গিয়ে বৃদ্ধা পটল মণ্ডলকে জীবিত অবস্থায় দেখা যায়।তিনি ওই গ্রামের মৃত বিলাস মণ্ডলের স্ত্রী। চার বছর ধরে প্যারালাইসে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে।

 

বৃদ্ধার ছেলের বউ নমিতা রানী বলেন, ‘আমার স্বামী দয়াল মণ্ডল দিনমজুর অভাবের মধ্যে খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমাদের ওয়ার্ডের মেম্বার প্রণব কুমার বিশ্বাস ছয় বছর আগে আমার শাশুড়ি পটল মণ্ডলকে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন। ভাতার টাকায় আমার শাশুড়ির চিকিৎসা চলত। হরিদাস কাটি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রাণাব মন্ডল, বলে আমি সুপারিশ করে এই কার্ড টি করে দিয়েছিলাম

আমি নিজেও এই গরিব বৃদ্ধার কার্ডটি কোনো উপাই করতে পারিনি অনেক দিন সমাজ সেবা অফিসে গিয়েছি কোনো মুল্য দেয়নি তারা

তার ভাতা বন্ধ আছে গত দেড় বছর ধরে।

অবশেষে কোন পথ না পেয়ে ফেইজবুকে পোস্ট করা হয়

 

নমিতা রানী বলেন আরো বলেন গত বছরের মার্চ মাসে আমার শাশুড়ি ভাতার ৩ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তারপর আর টাকা তুলতে পারিনি। কয়েক মাস আগে হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদে এশিয়া ব্যাংকের এজেন্টের কাছে গিয়েছিলাম। তাঁরা বলেছে এ অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। পরে সুন্দলী বাজারে আরেকটা এশিয়া ব্যাংকের এজেন্টের কাছে যাই। তাঁরা বই দেখে বলেছে এই বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

 

নমিতা আরো বলেন, টাকা না পাওয়ায় সমাজসেবা কর্মী লোকমানুল হকের কাছে বই নিয়ে মনিরামপুর অফিসে গিয়েছিলাম। তিনি ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে বই রেখে দেন। কিন্তু তিন মাস পার হলেও তিনি সমস্যা সমাধান না করে বইটি রেখে দেন। পরে অনেক কষ্ট করে লোকমানুল হকের কাছ থেকে বই উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তিনি বই ফেরৎ দিলেও আমাদের সমস্যা সমাধান করে দেয়নি।

 

হরিদাসকাটি ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘পটল মন্ডলের অসহায় অবস্থা দেখে তাঁকে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়েছি। এখন শুনি তাঁর ভাতা দেড় বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে।’

 

এ বিষয়ে লোকমানুল হক বলেন, ‘বিষয়টা আমি জানি না। কারো বই আমি আটকে রাখিনি।’

 

মনিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধা পটল মণ্ডলের ভাতা বন্ধের বিষয়ে তাঁর স্বজনেরা আমাকে জানাননি। আজ জানতে পেরে অনলাইনে সার্চ দিয়ে দেখেছি তাঁর ভাতা বন্ধ আছে।

তিনি বলেন, ‘যে কোনো কারণে পটল মণ্ডলের ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। আমি সমস্যা সমাধান করে দিচ্ছি।

এবিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন বিষয়টি আগে আমাকে জানানো হয়নি আমি খোঁজ খবর নিয়ে বৃদ্ধার ভাতার ব্যাবস্থা করে দিব ।

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। © All rights reserved © 2018-2024 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281