আমজাদ হোসেন,আনোয়ারা প্রতিনিধি
আনোয়ারা উপকূলে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গহিরা গ্রামের বাসিন্দারা। উপকূলীয় এই গ্রামের এক প্রান্তে সমুদ্রসৈকত। সেখানেই চলছে শুঁটকি শুকানোর কাজ। বর্ষাকাল বিদায় নেওয়ার পরই উপজেলায় শুঁটকি তৈরির মৌসুম শুরু হয়। শীত থেকে গ্রীষ্ম পর্যন্ত চলে শুঁটকি তৈরি।সাগর ঘেঁষে উপকূলে বাঁশ দিয়ে মাচাং তৈরি করে চলছে শুটকি শুকানোর কাজ। অনেকে আবার সাগরের মধ্যে মাছ ধরার নৌকায় শুকাচ্ছেন শুটকি।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শুটকির চাহিদা ব্যাপক। দেশের সবচেয়ে বড় শুটকির বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকায়। সেখান থেকে সারাদেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয় শুটকি। আর চট্টগ্রামের অতি সন্নিকটে আনোয়ারা উপজেলার অবস্থান। এখানে রয়েছে সামুদ্রিক মাছের ব্যাপক উৎস। আনোয়ারা উপকূলে তাই একটি মানসম্মত, আধুনিক শুটকি পল্লী গড়ে তুলতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আনোয়ারা উপকূলীয় গহিরা মাঝিরঘাট এলাকায় রশিদ নামের একজন মৎস্যজীবি মাচাং থেকে শুটকি তুলে বাছাই করে পরিবহণের জন্য প্রস্তুত করছিলেন। তাকে সহযোগিতা করছিলেন আরো একজন। মাচাংয়ে টাঙ্গানো আছে আরো অনেক শুটকি। তাছাড়া চাটাই বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে ফাইস্সা শুটকি।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, এখানকার শুঁটকি বিক্রি হয় চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার শুঁটকির আড়তগুলোতে। আমরা বড় সাইজের প্রতি কেজি শুটকি ১ হাজার টাকায় পাইকারী দরে বিক্রি হয়। মাঝারি সাইজের এক কেজি শুটকি ৮০০ টাকা। যা, পাইকাররা দেড় হাজার থেকে দুই হাজার পর্যন্ত বিক্রি করেন। সপ্তাহে একদিন চট্টগ্রাম শহর থেকে পাইকাররা এসে শুটকি নিয়ে যায়। একবারে ১৫ থেকে ১৬ টন পর্যন্ত শুটকি সরবরাহ দেয়া হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে এক চালানে এ লক্ষ টাকা লাভ হয়।
অন্যদিকে স্থানীয় অনেক মৎস্যজীবি সাগরের মধ্যে মাছ ধরার নৌকাতেই শুটকি শুকান। তারা ছুরি শুটকির পাশাপাশি লইট্টা, ফাইস্সাসহ আরো নানান প্রকারের শুটকি শুকান। এদের বেশিরভাগই আবার স্থানীয়ভাবে খুচরা বাজারে বিক্রি করা হয়। টাটকা সাগর থেকে তুলে নৌকার মধ্যে শুকানোর ফলে এসব শুটকি খুব সুস্বাদু আর মানও থাকে ভাল। এজন্য, আনোয়ারার গহিরার শুটকির বিষয়ে পাইকারদের কাছে আলাদা একটা কদর রয়েছে। তবে, সরকারি বেসরকারি আরো সহায়তা পেলে আনোয়ারা উপকূলে শুটকির ব্যবসা আরো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্যজীবিরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।