পাবেল আহমদ:: বসন্ত আসলো ধরায়, ফুল ফুটেছে বনে বনে’- কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার মতোই সুনামগঞ্জের শিমুল বাগানে টকটকে লাল শিমুল ফুলের রক্তিম আভা। ফাল্গুন চলে এলেও বাগানে ফুল ফুটতে শুরু করেছে অনেক আগেই।
২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন নিজের প্রায় ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে শিমুল গাছ রোপণের উদ্যোগ নেন। তিনি প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। দিনে দিনে বেড়ে ওঠা শিমুল গাছগুলো এখন হয়ে উঠেছে শিমুল বাগান। শিমুল বাগানের সঙ্গে লেবুর বাগানও গড়ে উঠেছে।
যাদুকাটা নদীর তীরে ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই শিমুল বাগানই দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পুরো এলাকাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল দেখা যায়। পুরো এলাকায় যেন রক্তিম আভা। ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে যাদুকাটা নদী, এপারে শিমুল বাগান। সব মিলেমিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। লাল পাপড়ি মেলে থাকা রক্তিম আভায় যেন পর্যটকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। ফাল্গুন আসার সাথে সাথে এখানে দেশ-বিদেশ থেকে আসতে শুরু করেন পর্যটকরা।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মানিগাঁও এলাকার শিমুল বাগানটি ঘুরে দেখা যায়, বাগানটি এখন ফুলে ফুলে লাল হয়ে আছে। সাথে রয়েছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসেন পর্যটকরা।
পর্যটকরা বলছেন ‘নদী-পাহাড়ের সম্মিলন এ শিমুল বাগানে। পৃথিবীর আর কোথাও এমন আছে কি-না আমার জানা নেই। এখানে এলে যে কারোর মন ভালো হয়ে যাবে। তবে বাগানের পরিচর্যা প্রয়োজন। বাগানটি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান হিসেবে অবদান রাখবে।
লন্ডন প্রবাসী হাবিব হোসেন বলেন, ‘শিমুল বাগানে আমার প্রথম আসা। বিদেশে বসে বসে শুধু ফেসবুকেই দেখেছি। আজ সামনাসামনি দেখতে পেলাম। ছবি থেকে বাস্তবে আরও সুন্দর এ বাগান। যিনি বাগান তৈরি করেছেন, তার প্রকৃতির প্রতি সঠিক জ্ঞান ছিল বলেই এখানে অনেক মানুষ আসে।’
সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘শিমুল বাগানের ফোটা ফুল দেখলে বোঝাই যায় বসন্ত এসে গেছে। তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গান মনে আসে, ‘আহা আজি এই বসন্তে, এতো ফুল ফোঁটে, এতো বাঁশি বাজে, এতো পাখি গায়।’ সত্যি বলতে শিমুল বাগানে এসে আমি সৌন্দর্য শব্দের আসল অর্থ খুঁজে পেয়েছি।’
বাগানের বর্তমান মালিক জেলা পরিষদের সদস্য সেলিনা আবেদীন বলেন, ‘বাগানের উন্নয়নে আমরা সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছি। পর্যটকদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে ভালো রেস্টুন্টে করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আলাদা কিছু তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাউছার উদ্দিন সুমন
নির্বাহী সম্পাদক: আনিছুর রহমান পলাশ
বার্তা সম্পাদক: শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান
সাব এডিটর: আবু তাহের, আফতাব উদ্দিন।