বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

ছাতকে বিউবোর্ড নিবাহী প্রকৌশলীসহ ১৪ জনের বিরু‌দ্ধে ঘুষ-দূর্নীতির তদন্ত শুরু

হাসান আহমদ
  • সংবাদ প্রকাশ মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১
  • ৫০৩ বার পড়া হয়েছে

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতি‌নিধি

সুনামগঞ্জের ছাতকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে চরম অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বহীনতা, ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি, প্রতারণা ও সীমাহীন দূর্নীতি মিটার চু‌রি.নতুন লাইন সংস্কা‌রের না‌মে দালাল চ‌ত্রেুর মাধ‌্যমেই প্রকৌশলী আবুল হো‌সেন ও নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুৃল্লাহ আল মামুন সরদারসহ ১৪জ‌নের বিরু‌দ্ধে  ঘুষ কে‌লেংকা‌রি তদন্ত শুরু হ‌য়ে‌ছে।

সি‌লেট বিদ‌্যুৎ উন্নয়ন বিতরন বিভা‌গের বিভাগীয় নিবাহী প্রকৌশলী আব্দুল রাজ্জাক,প্রশাসন বিভা‌গের রুহুল আ‌মিন,সহকা‌রি প্রকৌশলী জু‌য়েল রানাসহ ৩ সদস‌্য এক‌টি তদন্ত টিম কাজ শুরু ক‌রেছে।

গত রোববার সকাল ১০টা থে‌কে সন্ধ‌্যা ৭টা পযন্ত ছাতক বিদ‌্যুৎ উন্নয়ন বিতরন বিভা‌গের অ‌ফি‌সের নিবাহী প্রকৌশলী কক্ষে ব‌সে এলাকার ক‌য়েক জন ‌চি‌হিৃত দালাল‌কে অ‌ফি‌সে ডে‌কে এ‌নে দরজা বন্ধ ক‌রে গোপন তা‌দের কাছ থে‌কে জবাবব‌ন্ধি লি‌পিবন্ধ করেন তদন্ত ক‌মি‌টি। তদন্ত ক‌মি‌টির জ‌নৈক কর্মকতা দুদক প‌রিচয় দি‌য়ে ছাতক দোয়ারাবাজার একা‌ধিক ব‌্যক্তি‌কে মোবাইল ফোন দি‌য়ে ছাতকে চা‌রি‌দি‌কে আতংক ছ‌ড়ি‌য়ে দেয়ায় তদন্ত ক‌মি‌টি। অফি‌সে বাই‌রে পাজা‌রো গা‌ড়ি রে‌খে উপর তলায় দীঘ ১২ ঘন্টা দরজা বন্ধ ক‌রে নিবাহী প্রকৌশলী রু‌মে ব‌সে এসব কিসের তদন্ত হ‌চ্ছে।

এটা স‌ঠিক তদন্ত হ‌চ্ছে না ব‌লে গ্রাহক‌রা অ‌ভি‌যোগ ক‌রেন। বিদ‌্যুৎ গ্রাহক‌দের কাছ থে‌কে প্রকল্প বাস্তবায়নের না‌মে অ‌ফিস কমকতা,কমচা‌রি‌ ও স্থানীয় দালাল‌দের মাধ‌্যমে কো‌টি টাকার ঘুষ কে‌লেংকা‌রির দুনী‌তি তদন্ত ক‌মি‌টির সদস‌্যরা ঘটনাস্থ‌লে না গি‌য়েই তারা অ‌ফি‌সে এ‌সি রু‌মে ব‌সে ৫/৬ জন‌ ব‌্যক্তির জবাবব‌ন্ধি লি‌পিবদ্ধ ক‌রে কো‌টি টাকার ঘুষ কে‌লেংকা‌রির ঘটনাটি ভিন্নখা‌তে নি‌তে প্রচেষ্টা চালায় তদন্ত ক‌মি‌টি।

দুনী‌তিবাজরা নিবাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুনসহ ১৪জ‌নের বিরু‌দ্ধে ঘুষ কে‌লেংকা‌রি মিটার চু‌রিরসহ নানা অ‌নিয়‌ম দুনী‌তির ঘটনা  ভিন্নখা‌তে নি‌তে নিবাহী প্রকৌশলী আব্দুল আল মামুন সরদার নেতৃ‌ত্বে বিদ‌্যুৎ বিভা‌গের উধর্তন কতৃপক্ষ কা‌ছে ধরনা দি‌চ্ছেন ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে।

২০১৮ সালে ৫ মে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুৃল্লাহ আল মামুন সদার যোগদানের পর থেকে সেবামূলক এ প্রতিষ্টানটি এখন ঘুষ-দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত হচ্ছে । প্রতি‌নিয়ত  হাজার হাজার গ্রাহক চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এসব দুনী‌তি অ‌নিয়ম ঘুষ কে‌লেংকা‌রি দেখার কেউ নেই। জানা যায়, ছাতক বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নসহ প্রায় ২২হাজার গ্রাহক রয়েছে।

ছাতক শহরে শতাধিক ষ্টোন ক্রাসিং মিল, লাফার্জ-সুরমা সিমেন্ট লিঃ, ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরী লিঃ, নিটল পাল্প এন্ড পেপারমিল লিঃ, আকিজ বেভারেজ ফুড লিমিটেডসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা রয়েছে। বিশেষ করে ষ্টোন ক্রাসিং মিলে ট্রান্সফর্মার নষ্ট হলে এটি পরিবর্তনের নামে আদায় করা হয় দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকা। বৃহৎ এলাকায় আবাসিকও বানিজ্যিক গ্রাহকদের প্রতিবছর প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রান্সফর্মার বিকল হলে পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি ট্রান্সফর্মার বদলের নামে হাতিয়ে নেয়া হয় বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা। আবাসিক এলাকার ট্রান্সফর্মার বিকল হলে তার প্রধান সহযোগি আবুল হো‌সেনের মাধ্যমে গ্রাহকদের অফিসে ডেকে ঢাকা থেকে এটি পরিবর্তন করতে কয়েকমাস সময়ের কথা বলা হয়। উপ‌জেলার নোয়ারাই এলাকার রংপুর, একটি ক্রাসিং মেশিনের ট্রান্সফর্মার পরিবর্তনের জন্যে ১৫ ,২০ লক্ষ টাকা সং‌যো‌গে না‌মে হা‌তি‌য়ে নেন নির্বাহী প্রকৌশলী ও আবুল হো‌সেন। এছাড়া নোয়ারাই ইউনিয়নের টিলাগাঁও গ্রামে এসটি ২২খুটা ও এলটি ৩০খুটায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।

দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের কান্দাগাঁও গ্রামের ৩কিঃমিটার বিদ্যুতের নতুন সংযোগে ২৫লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। তার ক্ষমতার খুটির জোর থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নি‌চ্ছেন না কতৃপক্ষ।

মিটার রিডারদের এলাকায় না দিয়ে গ্রাহকদের নামে তিনি মনগড়া বিল দিয়ে দি‌চ্ছেন ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে।
গত ২৯ মে রাত ১১টার ছাতক বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল হোসেন ৪২টি সরকারি মিটার চুরি করে নেয়ার সময় ধরা পড়েন। কার্যালয়ের স্টোর রোম থেকে আবুল হোসেন মিটারগুলো নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় অফিসের লাইনম‌্যান সিকন্দর আলী প্রধান ও মনজুর আলীসহ অন্যান্যরা দেখে মিটারসহ তা‌কে আটক করেন। পরে  এ ঘটনা‌টি অফিস জুড়ে জানাজানি হলে ৪২ টি মিটার অফিসের একটি কক্ষে রাখা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে একজন লাইনম্যান বাদী হ‌য়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ছাতক বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ করা হয়।

এ নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন সরদার সচল মিটারকে অচল দেখিয়ে ওই গ্রাহকের নামে ফিক্সড বিল দেয়াশুরু ক‌রে আস‌ছে।কয়েকমাস মোটা অংকের টাকার ফিক্সড বিল দেয়ার পর মিটার পরিবর্তন করে বিভিন্ন গ্রাহকের বিল দেয়া পুরানো হাজার হাজার ইউনিটের টাকা হজম করছেন দুনী‌তিবাজরা।

এ‌দি‌কে ৩০বছ‌রের পুরা‌নো ঝু‌কিঁপুন বিদুৎ লাই‌নের সংস্কা‌র না ক‌রে লাখ লাখ টাকা নি‌য়ে সংস্কার কর‌ছেন ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে নিবাহী প্রকৌশলীর বিরু‌দ্ধে।
অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপদ খাম্বার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের খুটি, সুপা‌রি  ও কদম গা‌ছে। ফলে ঝুঁকির মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন ১৩ টি ইউনিয়নের ২২ হাজার গ্রাহক। এসব বিদ্যুৎ লাই‌নে দীর্ঘ‌দি‌নে পুরাতন লাইন ঝড় বৃ‌ষ্টি‌তে প‌ড়ে  শিক্ষক ,‌শিশু,যুবক,কৃষক, মা‌ঝি সহ ৫০জন ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হ‌য়ে মৃত বরন ও তিন শতা‌ধিক ছাগল গরু ম‌হিষ বিদুৎ স্পৃষ্ট খু‌টিঁ থে‌কে কা‌রেন্ট মা‌টি‌তে নে‌মে আ‌সে।

এ ব‌্যাপা‌রে উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল হোসেনের স‌ঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এ‌ড়ি‌য়ে যান। অব‌শে‌ষে মিটার সরানোর এ ঘটনা টি তি‌নি নির্বাহী প্রকৌশলীর কা‌ছে স্বীকার করেছে।

ছাতক বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরর্দার তার বিরু‌দ্ধে আনীত অ‌ভি‌যোগ স্বীকার ক‌রে ব‌লেন
৪২টি মিটার সরিয়ে নেয়ার এ ঘটনার সত‌্যতা স্বীকার করে‌ন।

এ ব্যাপারে সি‌লেট বিদ‌্যুৎ উন্নয়ন বিতরন বিভা‌গের তদন্ত ক‌মি‌টি সদস‌্য সহকা‌রি প্রকৌশলী জু‌য়েল রানা জানান,
১৪জনের বিরু‌দ্ধে দুনী‌তি অ‌নিয়ম ঘুষ কে‌লেংকা‌রি তদন্ত শুরু হ‌য়ে‌ছে। ১৪জন ব‌্যক্তির ম‌ধ্যে ৫/৬জন‌কে অ‌ফি‌সে এ‌নে তা‌দের জবাবব‌ন্ধি লি‌পিবন্ধ করে তদন্ত কাজ শুরু ক‌রেন। অ‌ফি‌সে না মা‌ঠে গি‌য়ে তদন্ত কর‌ছেন এসব প্রশ্ন করার স‌ঙ্গে তি‌নি মোবাইল ফোন কে‌টে দেয়।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ করছেন গ্রাহকরা#

সর্বশেষ সংবাদ পেতে চোখ রাখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সব ধরনের সংবাদ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনকৃত পত্রিকা। © All rights reserved © 2018-2024 Haworbarta.com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD
jphostbd-2281